একচালার মধ্যেই চার সন্তান-সন্ততি নিয়েই রয়েছেন দেবী দুর্গা। রয়েছে সিংহ-বাহন, মহিষাসুর। দেবীর গড়ন অনেকটা সাবেকি বাড়ির প্রতিমার ঢঙেই। ছবি দেখলেই মনে হবে নিশ্চয়ই এমনই কোনো বনেদি বাড়িতে হয়তো শুরু হয়ে গেছে পুজোর প্রস্তুতি। তবে তেমনটা একেবারেই নয়। এই প্রতিমা যে তৈরি হয়েছে কাগজ দিয়ে, তা কার্যত বোঝার উপায় নেই সামনে থেকে না দেখলে। এমনই বিরল সৃষ্টি করে বসলেন বছর নয়েকের কিশোর।
আয়ুষ নন্দী। ছোট্ট এই কিশোরের জন্ম থেকেই বেড়ে ওঠা সৃষ্টিশীলতা দেখে। বাবা নারায়ণ নন্দী একজন শিল্প নির্দেশক। কাজেই সেখান থেকে একরকমের অনুপ্রেরণা সেখান থেকেই পেয়েছিল আয়ুষ। ছোটো থেকেই মাটির মূর্তি, বিভিন্ন খেলনা, কাগজের কাজে সিদ্ধহস্ত এই খুদে। সৃজনী ক্ষমতা যেন তার জন্মগত। আর তার সঙ্গেই এবার বাড়তি পাওনা হয়ে গেল লকডাউন। ভাইরাসের সংক্রমণে তার কাছে অঢেল অবসর। কিন্তু সেই সময়কে বাকিদের মতো গেম খেলে কিংবা স্মার্টফোনের পিছনে খরচ করেনি আয়ুষ। বরং তার মধ্যে আন্দোলিত হল নতুন সৃষ্টির ভাবনা।
হ্যাঁ, এই লকডাউনেই তাকে বানাতে হবে একটা আস্ত দুর্গা প্রতিমা। সন্তানের বায়নায় হ্যান্ডমেড কাগজ, সিফন সুতো ও অন্যান্য সামগ্রী কিনে এনে দিলেন নারায়ণবাবু। প্রতিবেশীর থেকে এল সদ্য কেনা ফ্রিজের কার্ডবোর্ড। তা দিয়ে গড়ে উঠল ঠাকুরের কাঠামো। পরিপূর্ণতা পেল দেবীর সজ্জা।
নিজের বানানো প্রতিমার ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় দেওয়ার পরই তা বিস্মিত করে তোলে নেটিজেনদের। ভিডিওটি চোখে পড়ে বেলঘরিয়ার একটি সেলুনের মালিক তমাল পাহাড়ির। এই শিল্পকে স্বীকৃতি দিতে নিজেই এগিয়ে আসেন তিনি। অনুমতি নিয়ে এই প্রতিমা প্রদর্শনের জায়গা করে দেন নিজের সেলুনে। আর উপহার হিসাবে আয়ুষের জন্য রাখেন ধুতি, পাঞ্জাবি ও শঙ্কু সমগ্র। সেই সেলুনেই বর্তমানে রয়েছে এই দুর্গামূর্তি। ঢুঁ মেরে দেখে আসতে পারেন যে-কেউই...
ছবি ঋণ - Susanta Bar, Facebook
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
মদনমোহন তর্কালঙ্কারের দুর্গাপুজোয় প্রচলিত ছিল নরবলি; এখনও রয়েছে তার প্রতীক