জ্যাস্পার আর জিঙ্কস। চেনা চেনা লাগছে? লাগছে না? স্ক্রিনে এদের কীর্তিকলাপ দেখে না হেসে কিন্ত পারা যায় না। আশি পেরিয়েও আজও সমান জনপ্রিয় হানা-বারবারার কালজয়ী সৃষ্টি। কখনো ফ্রেড কুইমবি বা কখনো চাক জোনসের হাত ধরে বারবার খোলনলচে বদলে বেমালুম নতুন রূপে অবতীর্ণ দুই মক্কেল। ঝুলিতে একাধিক অস্কার, বেস্ট এনিমেটেড শর্টস-এর জন্য। নব্বই দশকের কার্টুন নেটওয়ার্কে মেগাস্টার এরাই।
উত্তরটা এরপর না দিতে পারলে পারলে কিন্ত লজ্জার কথা।
যাঃ!
ফসকে গেল তো! ঠিক যেভাবে টমের হাত ফসকে জেরি ঢুকছে গর্তে। সকাল থেকে ফন্দি এঁটে, সারা ঘরে ফাঁদ পেতে রেখেছিল টম। কিন্ত ধূর্ত ইঁদুর নানা ভাঙচি দিয়ে, গবেট বেড়ালের পশ্চাদ্দেশে একখান জব্বর লাথি কষিয়ে, ছুট ছুট ছুট! হ্যাঁ, টম এন্ড জেরির কথাই বলছি। ইঁদুর-বেড়াল দৌড়ের বয়স আশি ছাড়াল।
টম এন্ড জেরি, মূলত নির্বাক কার্টুন। কাজেই বড়ো ভূমিকা রয়েছে আবহসঙ্গীতের। সঙ্গীত পরিচালক স্কট ব্র্যাডলি না থাকলে হয়তো থেমেই যেত দৌড়। শয়তানি প্ল্যান আঁটার অনবদ্য সিকোয়েন্স, কিংবা ধ্বংসস্তূপ ভেঙে টমের হাতে শান্তির পতাকা, সুর-ছবির মেলবন্ধনে, পেট ফেটেছে হাসতে হাসতে।
বিভিন্ন প্রযোজকের হাতে পড়ে বদলেছে শিল্পশৈলি। গপ্প বলার ঢং। যেমন আমার, নিজের পছন্দ 'চাক জোন্স'-এর নির্দেশিত ছবিগুলি। অস্কারপ্রাপ্ত 'দ্য ক্যাট এবাভ এন্ড মাউজ বিলো’ এপিসোডের দ্বিতীয় সিনে দেখা যাবে অপেরা গায়ক টম, জেরির কাঁচা ঘুম দিয়েছে ভাঙিয়ে। ফলে জেরি, ফন্দি এঁটেছে অনুষ্ঠান পণ্ড করার। একটা লেবু নিয়ে শয়তান ইঁদুর, উইংসের পাশে দাঁড়িয়ে সুরুৎ সুরুৎ চাটতে শুরু করে। দৃশ্য দেখে গায়ক টমের দাঁত গিয়েছে টকে। সারাগায়ে শিরশিরানি। অস্বস্তি…
এমন বুদ্ধি কোনো হাড়জ্বালানো বাচ্চার মাথা থেকেই বেরোনো সম্ভব। মুখ্য দুই চরিত্রকে ঘিরে পার্শ্বচরিত্ররাও কম না। জেরির জ্ঞাতিগুষ্টিদের মধ্যে সবচেয়ে বেশিবার দেখা যাবে ছাইরঙা মিষ্টি 'নিবলস'কে। এছাড়া, টমকে 'চুন-চুন'-কর ধোলাই দেওয়া পালোয়ান ইঁদুর 'মাসলস'। বহুবার প্রেমে আঘাত পাওয়া, চিরবিরহী বেড়ালের প্রতিদ্বন্দ্বী কিন্ত অন্যান্য মার্জারগোষ্ঠী। টমের চিরশত্রু কুকুর 'স্পাইক' তো আছেই!
জয়ের পাল্লা মূলত জেরির দিকেই হেলে থাকলেও, বিভিন্ন এপিসোডে শাস্তি পায় সেও। বারবার হেরে যেতে যেতে, টমের এই টুকরো টাকরা জিত আমোদ যোগায়, বটে।
আশি পেরিয়েও চিরন্তন দৌড় চলছে। শতবর্ষ পার হলেও, থামার উপায় নেই…