ক্রমশ করোনা আতঙ্ক পেরিয়ে স্বাভাবিক হয়ে উঠছে জনজীবন। নতুন সংক্রমণের সংখ্যাও নিম্নমুখী। তবে এই ৯ মাসের মৃত্যুশিবির সত্যিই এক অনিরামেয় ক্ষত সৃষ্টি করে দিয়ে গিয়েছে। আর এর মধ্যে অনেকের শরীরেই সংক্রমণ ছড়িয়েছে মানুষের প্রয়োজনীয় চাহিদা মেটাতে গিয়ে। আর এই তালিকায় বহু চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীর মতোই আছেন রেলওয়ে কর্মচারীরাও। গত শুক্রবার রেলওয়ে বোর্ড প্রকাশিত রিপোর্টে জানানো হল সেই পরিসংখ্যান। আর সেই রিপোর্ট অনুযায়ী এই সময়ের মধ্যে অন্তত ৩০ হাজার রেল কর্মচারী করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। তার মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ৭০০ জনের।
রেলওয়ে বোর্ডের চেয়ারম্যান বিনোদ কুমার যাদব পরিসংখ্যান প্রকাশ করে জানিয়েছেন, প্রতিটি ক্ষেত্রেই আক্রান্ত কর্মচারীরা সরাসরি মানুষের মধ্যে কাজ করেছেন। কারোর কাজের ক্ষেত্র ছিল স্পেশাল ট্রেনের কামরার মধ্যে, কারোর প্ল্যাটফর্মে। ফলে সংক্রমণের সম্ভাবনা সবসময় ছিল। তবে এর ৩০ হাজার আক্রান্তের মধ্যে মাত্র ৭০০ জনের মৃত্যু প্রমাণ করে রেল কর্তৃপক্ষ দ্রুত ও উপযুক্ত চিকিৎসার বন্দোবস্ত করতে পেরেছে। যদিও প্রতিটা মৃত্যুই দুর্ভাগ্যজনক বলে উল্লেখ করেছেন তিনি।
রেলওয়ে বোর্ডের তরফ থেকে আরও জানানো হয়েছে, প্রথমেই ৫০টি রেল হাসপাতালকে কোভিড-কেয়ার সেন্টার হিসাবে ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। এখন সেই সংখ্যাটা ৭৪। তবে করোনায় মৃত কর্মচারীদের ক্ষতিপূরণের বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যে পার্লামেন্টে সমালোচনার মুখে পড়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। যদিও রেলমন্ত্রী পীযূষ গোয়েলের কথা অনুযায়ী, রেলের গাইডলাইনে কোনো রোগে আক্রান্ত কর্মচারীদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নিয়ম না থাকায় সেটা সম্ভব নয়। তবে পেনসন এবং এক্স-গ্রাসিয়া হিসাবে কিছু ক্ষতিপূরণ দেওয়ার পরিকল্পনা আছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
যদিও এখনও আক্রান্ত বা মৃত কর্মীদের সার্বিক চিত্র প্রকাশ করা হয়নি, তবে রেল বোর্ডের তরফ থেকে জানানো হয়েছে সাউথ-সেন্ট্রাল রেলওয়েতে আক্রান্তের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। এর পরেই আছে সেন্ট্রাল রেলওয়ে এবং নর্দার্ন রেলওয়ে। শুধুমাত্র রেল কর্মচারীদের পরিসংখ্যান থেকেই আন্দাজ করা যায় অন্যান্য জরুরি পরিষেবা পৌঁছে দিতে গিয়ে আরও কত মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন। এই কঠিন পরিস্থিতিতে তাঁরাই এক একজন প্রকৃত যোদ্ধা।
আরও পড়ুন
পৃথিবীজুড়ে আক্রান্ত ৫ কোটি, করোনা তবু ছুঁতে পারেনি এই দেশগুলিকে
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
করোনার প্রতিষেধক নিয়ে গবেষণার স্বীকৃতি, আন্তর্জাতিক সম্মান বঙ্গতনয়ার