বৃহস্পতিবার থেকে কলকাতা এবং জেলায় শুরু হয়েছে অ্যান্টিজেন টেস্ট। মূলত অতি দ্রুত, চল্লিশ মিনিটের ভিতর সন্দেহভাজন ব্যক্তির শরীরে করোনার উপস্থিতি জানান দিতেই শুরু হয়েছে এই পরীক্ষা। কিন্তু তার প্রথম দফার রিপোর্ট সামনে আসতেই চোখ কপালে উঠেছে সবার। মাত্র পঞ্চাশজনের মধ্যে হওয়া এই পরীক্ষায় যে দশজনের রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে, তাদের সাতজনের দেহেই নেই উপসর্গের বিন্দুমাত্র চিহ্ন। তাদের পরিবার এমনকি তাঁরা নিজেরাও কিছুমাত্র টের পাননি এই বিষয়ে।
আরও একটি তথ্য হল এই যে এদের মধ্যে নয়জনই জনবহুল চেতলা সি আই টি মার্কেটের দোকানদার। এর থেকে প্রমাণিত হল কলকাতায় সংক্রমণের একটা বড়ো অংশই ঘটছে বাজার থেকে। এর জেরেই স্বরাষ্ট্রসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন পুরসভায় করোনা নিয়ে বৈঠক শেষে জানান, বাজারগুলিতে পরীক্ষা এবং নজরদারির ব্যবস্থা আরও নিবিড় করা হচ্ছে। চেতলা অহীন্দ্র মঞ্চে বৃহস্পতিবার পরীক্ষা পদ্ধতির সূচনা করেন স্বয়ং পুরমন্ত্রী ও পুরসভার মুখ্যপ্রশাসক ফিরহাদ হাকিম।
রিপোর্ট হাতে পেয়ে বস্তুত অবাক হয়ে গেছেন তিনিও। ৫০ জনের মধ্যে ১০ জনের শরীরে কোভিড পজিটিভ পাওয়া মাত্র সঙ্গে সঙ্গে তাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করান ফিরহাদ। পুরসভা সূত্রে জানা গেছে, আট জনকে বালটিকুরির সেফ হোমে এবং একজনকে কেপিসি মেডিক্যাল কলেজ ও অন্যজনকে হোম আইসোলেশনে পাঠানো হয়েছে।
শুক্রবার ওই বাজার এলাকাতেই আরও বেশি সংখ্যক মানুষের দেহে চালানো হবে এই পরীক্ষা। জানা গেছে, শহরের ১৬ টি বরোতেই প্রতিদিন এই অ্যান্টিজেন টেস্ট চলবে। দৈনিক আটশো থেকে হাজার মানুষের পরীক্ষা করা হবে। এমনকি এই পদ্ধতিতে যাঁদের নেগেটিভ আসছে কিন্তু শরীরে ‘স্বাদ বা গন্ধ পাচ্ছেন না’ এমন উপসর্গ রয়েছে তাদের ফের আরটিপিসিআর-এর মাধ্যমে কোভিড-১৯ পরীক্ষা করা হবে।
আরটিপিসিআর পদ্ধতির মাধ্যমে রিপোর্ট পেতে দু’দিন লাগছিল বলেই এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, যাতে কম সময়ে বেশি মানুষের দেহে টেস্ট করা যায়। প্রতিটি জেলার মেডিক্যাল কলেজ ও জেলা হাসপাতালেও এই অ্যান্টিজেন কিট পাঠানো হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। সেখানেও এখন জরুরি চিকিৎসার প্রয়োজনে এই পরীক্ষা হবে বলেই খবর। সবমিলিয়ে শহর কলকাতার কপালে নতুন চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে এই টেস্ট।
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
মুম্বাইয়ের বস্তি অঞ্চলে ৫৭% মানুষের দেহেই রয়েছে করোনার অ্যান্টিবডি, দাবি সমীক্ষার