করোনাকালে গৃহহীন ইংল্যান্ডের ৭ লক্ষ পরিবার!

সারা পৃথিবী জুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে করোনা ভাইরাস। মহামারীর আতঙ্কের মধ্যেই আরও এক সমস্যার মুখোমুখি হলেন ইংল্যান্ডের অসংখ্য পরিবার। দীর্ঘদিন ধরে ভাড়া নিয়ে থাকা বাড়ি ছেড়ে দিতে হবে মাত্র কয়েকদিনের নোটিসে। বছরখানেক আগে এমনই অসংখ্য ঘটনার সাক্ষী ছিল ইংল্যান্ড। আর এমন বিপন্ন পরিবারের সংখ্যাটা নেহাৎ কম নয়। সারা দেশজুড়ে প্রায় ৭ লক্ষ পরিবারকে ঘরছাড়া হতে হয়েছে ‘নো-ফল্ট’ নোটিসের ভিত্তিতেই। তাঁরা কেউই হয়তো আর্থকভাবে খুব পিছিয়ে পড়া নন। কেউ কেউ হয়তো ভিনদেশ থেকে এসে দীর্ঘদিন বাস করছেন ইংল্যান্ডে। বাড়ি তৈরি করব-করব করেও করা হয়নি। তবে করোনা পরিস্থিতি তাঁদের প্রত্যেককেই আশ্রয়হীন করেছিল।

মহামারীর কিছুদিন আগেই, ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে স্বয়ং মহারানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের মুখে ‘নো-ফল্ট’ নোটিসের বিরোধিতা শোনা গিয়েছিল। পার্লামেন্টে অবিলম্বে বিল পাশ করে এই নিয়ম বন্ধ করারর কথা জানিয়েছিলেন তিনি। তবু বিপদের মুহূর্তে কোনো প্রতিশ্রুতিই বিপন্ন মানুষদের রক্ষা করতে পারল না। কারণ পার্লামেন্টে তখনও বিলটি পর্যবেক্ষণাধীন। আজও তা পাশ হয়নি। এর মধ্যে লক্ষ লক্ষ পরিবার গৃহহীন হয়ে শহর থেকে গ্রামাঞ্চলের দিকে সরে গিয়েছেন। সেখানেও জায়গা পাননি অনেকে। কারণ ভাইরাসের হাত থেকে বাঁচতে তখন সকলেই গ্রামে ফিরতে চাইছেন। একটি গণসমীক্ষায় দেখা যায়, ইংল্যান্ডের ভাড়াবাড়িতে থাকা পরিবারগুলির মধ্যে ৮ শতাংশই এই সময় ২১ নম্বর নোটিস, অর্থাৎ ‘নো-ফল্ট’ নোটিস হাতে পেয়েছেন। এই নোটিস অনুযায়ী ঘর ছাড়তে বলার কোনো কারণ জানাতে হয় না। এই ৮ শতাংশের সংখ্যাটা ৬ লক্ষ ৯৬ হাজারের কিছু বেশি। এছাড়াও আরও ৩০ শতাংশ পরিবার সবসময় নোটিস হাতে পাওয়ার আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটিয়েছেন। মহারানির প্রতিশ্রুতির ভিত্তিতে প্রশাসনের দ্বারস্থ হলেও কোনো লাভ হয়নি।

পুরো বিষয়টি নিয়ে অবশ্য ইতিমধ্যে পার্লামেন্টে আলোচনা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন আবাসন বিভাগের সেক্রেটারি পলি নিয়েট। গৃহহীন ব্যক্তিদের পুনর্বাসনের প্রক্রিয়াও শুরু হয়ে গিয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন জানিয়েছেন, অবিলম্বে পার্লামেন্টে বিলটি পাশ করানোর ব্যবস্থা করানো হবে। শুধুই করোনাকালে নয়, দীর্ঘদিন ধরেই বহু মানুষকে এই অসাংবিধানিক নিয়মের শিকার হতে হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন তিনি। এই ভেঙে পড়া ব্যবস্থা বদলাবেই। তবে সবচেয়ে কঠিন সময়েই মানুষকে এই নিয়মের মধ্যে দিয়ে  যেতে হয়েছে। ব্রিটিশ পার্লামেন্ট দ্রুত পদক্ষেপ নিলে এতটা সমস্যার মধ্যে পড়তে হত না বহু পরিবারকে।

Powered by Froala Editor

আরও পড়ুন
ফিলিপের শেষযাত্রায় পাশাপাশি হাঁটবেন না হ্যারি-উইলিয়াম, ঘোষণা রাজপরিবারের