কথায় আছে, ‘কারোর সর্বনাশ তো কারোর পৌষমাস।’ কোভিড-১৯ মহামারীর (Pandemic) সময় এই প্রবাদবাক্যই যেন প্রতিরূপ হয়ে উঠেছে বাস্তবের। লকডাউন ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই গোটা বিশ্বজুড়ে দেখা গিয়েছিল আর্থিক সংকট। বিশেষভাবে নিম্ন ও মধ্যবিত্তরা সম্মুখীন হয়েছিলেন ভয়াবহ আর্থিক সংকটের। কাজ হারিয়েছিলেন কোটি কোটি মানুষ। কিন্তু এই আর্থিক বিপর্যয়ের মধ্যেও প্রায় প্রতিদিনই উত্থান হয়েছে একজন নতুন বিলিয়নেয়রের (Billionaire)।
হ্যাঁ, সম্প্রতি এমনই অদ্ভুত চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এল আন্তর্জাতিক অলাভজনক সংস্থা ‘অক্সফাম ইন্টারন্যাশনাল’-এর রিপোর্টে। সোমবার প্রকাশিত এই রিপোর্ট জানাচ্ছে, মহামারী চলাকালীন সময়ে প্রতি ৩০ ঘণ্টায় একজন ব্যক্তির সামগ্রিক সম্পদের পরিমাণ ছাড়িয়েছে বিলিয়নের গণ্ডি। সোমবার সুইজারল্যান্ডের ডাভোসে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম চলাকালীন প্রকাশিত হয়েছে ‘অক্সফাম’-এর ‘প্রফিটিং ফ্রম পেইন’ শীর্ষক প্রবন্ধটি।
হ্যাঁ, আক্ষরিক অর্থেই ‘যন্ত্রণা থেকে লাভ’। আন্তর্জাতিক সংস্থাটির গবেষণা ও সমীক্ষায় উঠে আসছে কয়েক শো নতুন বিলিয়নেয়রের উত্থানের পিছনে লুকিয়ে রয়েছে অসংখ্য মানুষের দারিদ্রকষ্ট। সামগ্রিক আর্থিক বিপর্যয়ই ক্ষমতা তুলে দিয়েছে মুষ্টিমেয় কিছু মানুষের হাতে। বিশেষত মহামারীকালী সময়ে খাদ্যদ্রব্য এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় সামগ্রীর ক্রমাগত মূল্যবৃদ্ধিই ভাগ্য খুলে দিয়েছে তাঁদের।
পরিসংখ্যান বলছে, ২০১৯ সালে বিশ্বজুড়ে বিলিয়নেয়রের সংখ্যা ছিল ২০৯৫ জন। ২০২২ সালে তা গিয়ে পৌঁছেছে ২৬৬৮-এ। অর্থাৎ, ৫৭৩ জন নতুন বিলিয়নেয়রের উত্থান হয়েছে মাত্র ২ বছরের মধ্যে। রিপোর্ট থেকে আরও জানা যাচ্ছে, বিশ্বের মোট উৎপাদনের ১৪ শতাংশই রয়েছে বিলিয়নেয়রদের পকেটে। শুধু প্রথম ১০ জন বিলিনেয়রের মিলিত সম্পদের পরিমাণ আর্থিক পিরামিডের তলার ৪০ শতাংশ মানুষ অর্থাৎ প্রায় ৩০০ কোটি দরিদ্র মানুষ সম্পদের সমান। আর এর উল্টোদিকের ছবিটা?
আরও পড়ুন
নাচতে-নাচতেই মৃত অসংখ্য মানুষ! মহামারী, না অন্য রহস্য?
সেটা আরও ভয়ঙ্কর। প্রতি ৩৩ ঘণ্টায় ১০ লক্ষ মানুষ তলিয়ে গেছেন দারিদ্রসীমার নিচে। অর্থাৎ, বলাই যায় প্রতিজন বিলিয়নের উত্থানের কারণে চরম আর্থিক সংকটে পড়েছেন প্রায় ১০ লক্ষ মানুষ। আর এই গ্রাফ মেনেই, ২০২২ সালের মধ্যেই ২৬.৩ কোটি মানুষের অবস্থান নেমে যাবে দারিদ্রসীমার নিচে। ফলে, বিশ্বজুড়ে একাধিক জায়গাতেই দেখা যেতে পারে দুর্ভিক্ষ। এমনটাই ভবিষ্যদ্বাণী করছে অক্সফাম।
আরও পড়ুন
ওমিক্রন : তৃতীয় তরঙ্গ না স্বতন্ত্র মহামারী? কী বলছেন চিকিৎসকরা?
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
‘মিথ্যে মহামারী’ তৈরি করে ৮ হাজার ইহুদির প্রাণ বাঁচিয়েছিলেন পোলিশ চিকিৎসক