মেয়েকে বারণ করলেও পরে নিজেই ক্যানসার-আক্রান্তদের জন্য চুল দান করলেন মা

ক্যানসার-আক্রান্ত রোগীদের জন্য চুল দান করতে চেয়েছিলেন মেয়ে। বাধা দিয়েছিলেন মা। তারপর কেটে গেছে পাঁচ মাস। হঠাৎ একদিন মা জানান, চুল দান করতে চান তিনি নিজেই। এবং শেষ পর্যন্ত সেটাই বাস্তব হল। এমন ব্যাতিক্রমী ঘটনা ঘটল হাওড়ার আন্দুলে।

আরও পড়ুন
বাবার মৃত্যুবার্ষিকী, ক্যানসার রোগীদের জন্য চুল দান করলেন কৃষ্ণনগরের তরুণী

তরুণী ঈশিতা মাঝি ২০১৮ সালে জানতে পারেন, ক্যানসার-আক্রান্ত রোগীদের জন্য চুল দান করা যায়। যেহেতু কেমোথেরাপির পরে অনেক রোগীরই চুল পড়ে যায়, হীনমন্যতায় ভোগেন অনেকেই। সেইসব রোগীদের জন্য পরচুলা তৈরি করে এক সংস্থা, নাম ‘কোপউইথক্যানসার।’ ঈশিতা ঠিক করেন, তাঁর চুল তিনি দান করবেন। কিন্তু চুলের দৈর্ঘ্য অন্তত ১২ ইঞ্চি হওয়া বাধ্যতামূলক। তখনও অত লম্বা না হওয়ায়, ঈশিতা ঠিক করেন, কয়েকমাস পরে দান করবেন তিনি। কথায়-কথায় এ-বছর জুন মাসে মা’কে জানান, তিনি চুল দান করবেন আগামীতে। শুনে মা অর্থাৎ মিতা মাঝি মেয়েকে বারণ করেন। মেয়ের বিয়ের কথাবার্তা চলছে, শ্বশুরবাড়ি এই ব্যাপারটিকে কীভাবে দেখবে - ইত্যাদি মধ্যবিত্ত সংকোচে চিন্তিত ছিলেন তিনি। ঈশিতার পরিকল্পনা থেমে যায় সেখানেই।

কিছুদিন আগে মা নিজেই মেয়েকে বলেন, ‘তুই চুল দান না করতে পারিস, আমি তো পারি! আমার চুলও যথেষ্ট বড়!’ মায়ের কথা শুনে অবাক হন ঈশিতা। খোঁজখবর নিয়ে চুল পাঠানোর পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে পারেন। অবশেষে, ক্যানসার-আক্রান্তদের জন্য আজ নিজের চুল দান করলেন মা।

৫৩ বছরের মিতা মাঝি যে নজির তৈরি করলেন, তা সত্যিই প্রশংসনীয়। এখন অবধি সাধারণত তরুণীরাই ক্যানসার-আক্রান্তদের জন্য চুল দান করতে এগিয়ে এসেছেন। প্রৌঢ়া মায়ের এই দৃষ্টান্ত নিঃসন্দেহে সাহস যোগাবে আরও অনেক মধ্যবয়সিনীকেই। মিতা মাঝিকে আমাদের অভিনন্দন...