‘গোরিয়া প্লাস্টিক খা গ্যয়ি - টিভিতে হিন্দুস্থান ইউনিলিভারের প্লাস্টিক বন্ধের বিজ্ঞাপন আমরা সবাই দেখেছি। মানুষ খাদ্য ও প্লাস্টিকের মধ্যে তফাৎ বুঝতে পারলেও অন্যান্য পশুপাখি তা বুঝতে পারে না। তবুও সচেতন হই না আমরা। সাম্প্রতিককালের এই ঘটনা তারই প্রমাণ। তামিলনাড়ুর ভেটেরিনারি ইউনিভার্সিটির সার্জেনরা একটি গরুর পাকস্থলী থেকে ৫২ কেজি ওজনের প্লাস্টিক বের করেছেন।
শুধু প্লাস্টিকই নয়, সাড়ে ৫ ঘণ্টার এই অপারেশনে বেরিয়েছে সূচ ও পিনের মতো ক্ষতিকর বস্তুও। ২০ দিন আগে গরুটি একটি বাছুরের জন্ম দিয়েছিল। এর কয়েক সপ্তাহ পর গরুটির দুধের পরিমাণ কমে যায়। অধিকাংশ সময় গরুটি নিজের পেটে লাথি মারত। এছাড়া মল ও মূত্র ত্যাগেরও অসুবিধা হত গরুটির।
অবস্থা শোচনীয় দেখেই গরুটির মালিক শ্রী মনিরত্নম গরুটিকে তামিলনাড়ু ইউনিভার্সিটি অফ ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিমাল সায়েন্স(তনুবাস)-এ নিয়ে আসেন। সেখানে ম্যানুয়াল রেক্টাল এক্সামিনেশন করে গরুটির পাকস্থলীতে প্লাস্টিকের উপস্থিতি ধরা পড়ে। সার্জেনদের বক্তব্য, গত দুবছর ধরে গরুর রুমেনে(পাকস্থলীর অংশ) প্লাস্টিক জমছে। রুমেনের প্রায় ৭৫% প্লাস্টিকে ভরা ছিল।
জেনারেল অ্যানাসথেশিয়ার বদলে রিজিওন স্পেসিফিক অ্যানাসথেসিয়া করা হয় গরুটির। পাকস্থলীর প্রাচীরে প্লাস্টিক লেগে থাকায় অস্ত্রোপচার প্রক্রিয়া জটিল হয়ে উঠেছিল। লাগাতার সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা পরিশ্রমে সফল হয় অস্ত্রোপচার।
এত জটিল অস্ত্রপ্রচারের খরচ কত, শুনলে অবাক হবেন। মাত্র ১২০ টাকা। রেজিস্ট্রেশন করতে ৭০ টাকা ও সার্জারির খরচ ৫০ টাকা। অথচ এই অস্ত্রোপচার কোনও প্রাইভেট ভেটেরিনারি ক্লিনিকে করলে পড়ত ৩৫,০০০ টাকা। যা গরুটির ক্রয়মূল্যের দ্বিগুণ।