ওড়িশার মহানদীর বুক থেকে উঠে এল ৫০০ বছরের পুরনো মন্দির

নদীর ভেতর ডুবে আছে প্রাচীন ভারতের নিদর্শন। হঠাৎই জল পেরিয়ে উঠে এল জনসমক্ষে। এমনই ঘটনার সাক্ষী থাকল ওড়িশা। মহানদীর ভেতর থেকে জেগে উঠল প্রায় ৫০০ বছর পুরনো মন্দিরের চূড়া। আর সেখানেই অনুসন্ধান চালিয়ে প্রাচীন ভারতের আরও একটি হারিয়ে যাওয়া চিত্র খুঁজে পেলেন ঐতিহাসিকেরা।

ওড়িশার নয়াগড় জেলার পদ্মাবতী গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে মহানদী। সেখানেই জল একটু নামলে মাঝে মাঝে অল্প জেগে ওঠে একটা বাড়ির মতো অংশ। শেষ যাকে দেখা যায় ১১ বছর আগে। কিন্তু সেটা কী? মহানদীর ওই অংশের নিচেই বা কী আছে? এমন প্রশ্নই এসেছিল ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল ট্রাস্ট ফর আর্ট অ্যান্ড কালচারাল হেরিটেজ (ইনট্যাক)-এর প্রোজেক্ট অ্যাসিস্ট্যান্ট দীপক কুমার নায়েকের। তাঁকে সাহায্য করেছিলেন রবীন্দ্র কুমার রানা, যিনি স্থানীয় প্রত্নতত্ত্ব নিয়ে পড়াশোনা করেছিলেন। সেখান থেকেই প্রত্নতাত্ত্বিকদের একটি বিশেষ দল পদ্মাবতী গ্রামের পাশে মহানদীর ওই বিশেষ অঞ্চলে অনুসন্ধান চালান। তার ফলেই সামনে এল ওই মন্দিরের কথা; সামনে এল ওই অঞ্চলের প্রাচীন ইতিহাসের একটি খণ্ডচিত্র। 

অন্তত ৫০০ বছরের পুরনো এই মন্দিরটি আসলে গোপীনাথ দেবের মন্দির। এটি ছাড়াও একটা সময় আরও বেশ কিছু মন্দির এই অঞ্চলে ছিল। এই গোটা অঞ্চলটির নাম ছিল ‘সাতপাটন’। সাতটি গ্রাম নিয়ে তৈরি হয়েছিল এটি, যার একটি অংশ হল পদ্মাবতী গ্রাম। উনিশ শতকে মহানদীর গতিপথ বদল করলে এই বিস্তীর্ণ অঞ্চল জলের তলায় চলে যায়। সেই সঙ্গে তলিয়ে যায় মন্দিরগুলি। তবে সময় বুঝে ভেতরের বিগ্রহ সরিয়ে নেওয়ায় পুজো থেমে থাকেনি। প্রত্নতাত্ত্বিকদের অনুমান, অন্তত ২২টি মন্দির জলের তলায় চলে গিয়েছিল। গোপীনাথের এই মন্দিরটি সবচেয়ে উঁচু বলে এর চূড়া বা ‘মস্তক’ মাঝে মাঝে অল্প বেরিয়ে আসে। তবে গবেষণা এখনও থেমে নেই। পদ্মাবতী গ্রামে তো বটেই, মহানদীর গতিপথ বরাবর আরও ৯টি জেলায় গবেষণা চালানো হবে। আরও কী কী নতুন ইতিহাস উঠে আসে আমাদের সামনে, সেটাই এখন দেখার। 

Powered by Froala Editor

আরও পড়ুন
সুদূর ভিয়েতনামে উদ্ধার ১১০০ বছরের প্রাচীন শিবলিঙ্গ