৫ মাসে ৫০০ টন প্লাস্টিক অপসারণ যমুনা নদী থেকে, সৌজন্যে ভারতীয় প্রযুক্তি

প্রথম দফার লকডাউনে বেশ কিছুটা সেরে উঠেছিল যমুনা নদী। তবে কলকারখানা এবং বাজার খুলতেই আবারও দূষিত হতে চলেছে জল। নানা ধরনের বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থ তো রয়েছেই, সঙ্গে রয়েছে মিশছে সবচেয়ে বিপজ্জনক পদার্থ প্লাস্টিক। তবে যমুনা নদীতে প্লাস্টিক দূষণ রোধ করতে এবার এক অভিনব পদ্ধতি নিয়ে এল জিওসাইকেল ইন্ডিয়া (Geocycle India)। নতুন এই পদ্ধতির নাম বাবল কার্টেন টেকনোলজি (Bubble Curtain Technology)। আর এর ফলে গত ৫ মাসে অন্তত ৫০০ টন প্লাস্টিক অপসারণ সম্ভব হয়েছে।

অম্বুজা সিমেন্ট এবং এসিসি লিমিটেডের যৌথ উদ্যোগে তৈরি জিওসাইকেল ইন্ডিয়া সংস্থাটি বিগত বেশ কয়েক বছর ধরে পরিবেশ দূষণ নিয়ে গবেষণা করে চলেছে। এই দুই সংস্থার কলকারখানায় তৈরি হওয়া দূষক পদার্থগুলিকে পুনর্ব্যবহার করাই প্রাথমিক উদ্দেশ্য। আর আগ্রা শহরে রয়েছে দুই সংস্থারই বেশ কিছু কারখানা। সেই দূষণ রোধ করতেই গতবছর নেওয়া হয় ক্লিন আগ্রা প্রকল্প। আর তার অংশ হিসাবেই গবেষকরা তৈরি করেছেন নতুন এই প্রযুক্তি। একটি বিশেষ ধরনের হাওয়াভর্তি নল বসিয়ে দেওয়া হয়েছিল যমুনা নদীর পার বরাবর। এর থেকে একটু একটু করে বেরিয়ে আসা বুদবুদগুলি যুক্ত হয়ে এক অদৃশ্য জাল রচনা করে। জলজ প্রাণীরা সেই জাল ভেদ করে চলে যেতে পারে সহজেই। কিন্তু প্লাস্টিক আবর্জনা থাকলেই আটকা পড়তে বাধ্য।

জলজ বাস্তুতন্ত্রের কোনো ক্ষতি করে না এই প্রযুক্তি। বরং জলে অক্সিজেনের পরিমাণ বাড়িয়ে তা আরও বাসযোগ্য করে তোলে। আর এই প্রযুক্তির মাধ্যমে প্লাস্টিকজাত আবর্জনার পরিমাণ একেবারে শূন্যে নামিয়ে আনা সম্ভব। প্রথমবারের পরীক্ষায় সাফল্যও মিলেছে হাতেনাতে। ৫ মাস একটি প্ল্যান্টে পরীক্ষার পর এবার দ্বিতীয় প্রকল্পের কাজ শুরু করতে চলেছে জিওসাইকেল ইন্ডিয়া। আর এবারের কেন্দ্র বারাণসী শহর। বরুণা নদী যেখানে গঙ্গার সঙ্গে মিশেছে, সেখানেই বরুণা নদীর উপর তৈরি হবে নতুন কেন্দ্র। ইতিমধ্যে তার পরিকল্পনা শুরু হয়ে গিয়েছে। আর এই দুই প্রকল্প সফল হলে সারা দেশজুড়ে এই প্রযুক্তিকে কাজে লাগানো হবে বলে জানিয়েছেন অম্বুজা সিমেন্টের কর্তারা।

Powered by Froala Editor

আরও পড়ুন
পরিত্যক্ত প্লাস্টিক থেকেই বস্ত্রনির্মাণ, পথ দেখাচ্ছে রাজস্থানের কিশোর