বইয়ের পাতা থেকে মানুষ মুখ সরিয়ে নিচ্ছে ক্রমশ। এখন ঘণ্টার পর ঘণ্টা বই পড়তে দেখা যায় খুব কম মানুষকেই। তবে এর মধ্যেই ছোট থেকে বই আঁকড়ে বাঁচার প্রস্তুতি নিচ্ছে কেউ কেউ। ৫ বছরের ভারতীয় বংশোদ্ভূত কিয়ারা কউর তেমনই এক ব্যতিক্রমী নাম। বইয়ের সঙ্গে তার ভালোবাসা তৈরি করল দুটি রেকর্ড। মাত্র ১০৫ মিনিটে ৩৬টি বই সম্পূর্ণ শেষ করে কিয়ারা জায়গা করে নিল লন্ডন ওয়ার্ল্ড বুক অফ রেকর্ড এবং এশিয়া বুক অফ রেকর্ডে।
আবু-ধাবি প্রবাসী ভারতীয় দম্পতির ছোট্ট মেয়ে কিয়ারা। অক্ষরপরিচয়ের সময় থেকেই বইয়ের সঙ্গে তার এক অদ্ভুত বন্ধুত্ব তৈরি হয়েছে। এমনটাই জানিয়েছেন কিয়ারার বাবা ডঃ রবীন্দ্রনাথ। কর্মজীবনে ব্যস্ত বাবা-মা সেভাবে মেয়েকে সময় দিতে পারেন না। সেই সময়টুকু অবশ্য বই পড়ে দিব্যি কাটিয়ে দিতে পারে কিয়ারা। এই বয়সেই অন্তত ২০০টি বই পড়ে ফেলেছে কিয়ারা। তার কথায়, বই এমন এক বন্ধু যা সবসময় সঙ্গে থাকে। রাস্তায়, গাড়িতে হোক বা পাহাড়ের চূড়ায় অথবা সমুদ্রের ধারে, বইয়ের মলাট উলটে বসে যাওয়া যায় সব জায়গায়।
কিয়ারা অবশ্য বই পড়ে যত গল্প জানতে পারে, সেইসব গল্প শোনানোর একজন বন্ধুও পেয়েছে। কিয়ারার দাদু ভারত থেকেই ফোনে যোগাযোগ রেখেছেন নাতনির সঙ্গে। কিয়ারা সমস্ত নতুন গল্প শোনায় দাদুকে। কিয়ারার বইপ্রেমের পিছনে দাদুর ভূমিকাই সবচেয়ে বেশি, এমনটাই বলছেন ডঃ রবীন্দ্রনাথ। ‘অ্যালিস ইন দ্য ওয়ান্ডারল্যান্ড’, ‘লিটল রেড রাইডিং হুড’ বা ‘সিন্ডারেলা’-র মতো রূপকথার গল্প সবচেয়ে ভালোবাসে কিয়ারা। তবে এসবের চেয়েও আশ্চর্যের তার পড়ার দ্রুততা। মাত্র পৌনে দুঘণ্টার মধ্যে ৩৬টি বই পড়ে শেষ করা একজন ৫ বছরের শিশুর পক্ষে যে সম্ভব, তা বিশ্বাস করাই কঠিন। লন্ডন ওয়ার্ল্ড বুক অফ রেকর্ডে সবচেয়ে দ্রুত বইপাঠক যেমন কিয়ারা, তেমনই এশিয়া বুক অফ রেকর্ড অনুযায়ী মহাদেশের শিশুদের মধ্যে একটানা সবচেয়ে বেশি সময় বই পড়ার রেকর্ডও এটি। কিয়ারার এই বিশ্বজয় ভারতীয়দের কাছে সত্যিই গর্বের।
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
অসংখ্য দুষ্প্রাপ্য বইয়ের পসরা সাজিয়ে পাঠকের অপেক্ষায় গড়িয়াহাটের তাপস কয়াল