ধীরে ধীরে স্বাভাবিকের দিকেই হাঁটা শুরু করেছিল ব্রিটেন। সংক্রমণ খানিকটা নিয়ন্ত্রণে আসতে ছন্দে ফিরছিল ব্রিটেনের জনজীবন। তবে গত ডিসেম্বর মাসেই ব্রিটেনে সংক্রমণ দেখা যায় নতুন করোনাভাইরাস স্ট্রেনের। আছড়ে পড়ে মহামারীর তৃতীয় তরঙ্গ। এবার তার মোকাবিলা করতে পৃথিবীর কঠিনতম লকডাউনের পথকেই বেছে নিলেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বোরিস জনসন।
সোমবার রাতেই লকডাউনের কথা ঘোষণা করেন তিনি। জানানো হয় জরুরি পরিষেবা বাদ দিয়ে সমস্ত দোকান, অফিস, যান-চলাচল বন্ধ থাকবে আগামী বুধবার থেকে। টানা ৪৯ দিনের জন্য স্থায়ী হবে এই লকডাউন। অর্থাৎ, আগামী ফেব্রুয়ারি মাসের ২২ তারিখ পর্যন্ত চলবে কড়া শাসন। সেইসঙ্গে মার্চের আগে স্কুল-কলেজ খোলার কোনো সম্ভাবনাই নেই বলে জানিয়ে দিলেন তিনি।
ইংল্যান্ড ছাড়া ব্রিটেনের অন্য দুই অংশ ওয়েলস এবং উত্তর আয়ারল্যান্ডে বেশ কিছুদিন আগে থেকেই শুরু হয়ে গেছে লকডাউন। অন্যদিকে সোমবার রাত থেকেই সম্পূর্ণ লকডাউন চালু হয়েছে স্কটল্যান্ডেও। তবে সিদ্ধান্ত নিতে খানিকটা দেরিই করে ফেলল ইংল্যান্ড। করোনা ভাইরাসের এই নতুন স্ট্রেন আগের থেকে ৭০ শতাংশ বেশি সংক্রামক আরও দ্রুত তা ছড়িয়ে পড়েছে ইংল্যান্ডে। শুধু গত সপ্তাহের তুলনাতেই গড়ে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে ১৭ হাজারের কাছাকাছি। দৈনিক মৃত্যু ৫০০-র আশেপাশে।
সোমবার রাতে জাতির উদ্দেশ্যে ভাসনে বোরিস জনসন অনুরোধ করেন, অত্যন্ত জরুরী কাজ না থাকলে যেন সকলেই বাড়িতে থাকেন। সরকারি পরিসংখ্যান জানাচ্ছে সংক্রমণের আশঙ্কা রয়েছে ১ কোটি ২২ লক্ষ মানুষের। পাশাপাশি জানুয়ারির মধ্যেই মৃত্যুর সংখ্যা পৌঁছতে পারে ১ লক্ষে। যার মধ্যে অধিকাংশই সত্তরোর্ধ্ব নাগরিক, স্বাস্থ্যকর্মী এবং অন্যান্য জরুরী পরিষেবা প্রদানকারী সরকারি কর্মী।
বিশ্বের প্রথম দেশ হিসাবে গণ-ভ্যাক্সিনেশন শুরু করেছিল ইংল্যান্ড। তা সত্ত্বেও ভাইরাসের তৃতীয় তরঙ্গে রীতিমতো বেকায়দায় ‘কুইন’-এর রাজ্য। তবে মৃত্যুর হার খানিকটা হলেও কমেছে বলে দাবি জানান ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু অন্যদিকে তিনগুণ বেড়েছে পজিটিভিটি হারও। তাতেই সিঁদুরে মেঘ দেখছেন ব্রিটেনের স্বাস্থ্য দপ্তর। এখন দেখার কড়া টায়ার ফোর লকডাউন কতখানি আয়ত্তে আনতে পারে পরিস্থিতিকে...
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
জলবায়ু পরিবর্তন এবং করোনার সংক্রমণ— জোড়া বিপর্যয়ে নাজেহাল কাশ্মীরের জাফরান চাষিরা