রাজ্যে ক্রমাগত বেড়ে চলেছে হাতির মৃত্যুর সংখ্যা। ২০১৫ সাল থেকে বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে মারা গেছে ৪৭টি হাতি। যার মধ্যে উত্তরবঙ্গে ঘটেছে ২২টি ঘটনা। বাকি ২৫টি দক্ষিণে। চাঞ্চল্যকর এই রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসার পরই গত সেপ্টেম্বরে বন্যপ্রাণীর মৃত্যুর ব্যাপারে মামলা রুজু করেছিল কলকাতা হাইকোর্ট। কঠোর নির্দেশ দিয়েছিল পরিস্থিতি ঠেকাতে। এবার সেই রায়ের জেরেই নড়ে চড়ে বসল রাজ্যের সরকার।
অরণ্য সংলগ্ন এলাকায় অনুচ্চ বৈদ্যুতিক তারের খুঁটি থেকেই বাড়ছে বিপত্তি। এমনটাই উঠে এসেছিল রিপোর্ট পর্যবেক্ষণে। তবে একাধিক বার একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হওয়ার পরেও কেন কোনো ব্যবস্থা নেয়নি বিদ্যুৎ বিভাগ, সে ব্যাপারেই তলব করে সরকার। সার্কিট ব্রেকার এবং হাতিদের অনুপ্রবেশের জায়গায় স্বল্প ভোল্টেজের ইলেকট্রিক ফেন্সিংয়েরও ব্যবস্থা করতে নির্দেশ দেওয়া হয়। প্রয়োজনে বৈদ্যুতিক পরিবাহী তারে উচ্চমানের ইনসুলেশন করা হবে বলেও জানানো হয় সরকারি সূত্রে।
তবে শুধু হাতিদের মৃত্যুই ঘটনা ঘটছে না। বন্যপ্রাণীর সঙ্গে মানুষের সংঘাত পৌঁছেছে চরমে। পরিসংখ্যান বলছে সেই কথাই। গত ৫ বছরে বাঘের আক্রমণে সবথেকে বেশি মানুষের প্রাণ গেছে বাংলাতেই। হাতির আক্রমণে নিহতের নিরিখে রাজ্যের স্থান দ্বিতীয়। ২০১৫ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে বন্যপ্রাণীর আক্রমণে নিহত হয়েছেন মোট ৫৮৪ জন মানুষ। বন্যপ্রাণীদের নিরাপত্তার পাশাপাশি আক্রান্ত নাগরিকদেরও ক্ষতিপূরণে জোর দেওয়ার কথা জানায় সরকার। ২.৫ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণের পাশাপাশি নিহতদের পরিবারের একজন সদস্যকে হোম গার্ডের চাকরির জন্যেও প্রতিশ্রুতি দেয় রাজ্য।
কলকাতা আদালত এবং উপর মহলের চাপে পড়েই দ্রুত কাজ শুরু হয়েছে প্রশাসনিক স্তরে। এখনও অবধি নিহতদের পরিবারের চাকরি পেয়েছেন মাত্র ৪৩৪ জন। বাকিরা কেন বঞ্চিত হলেন এই অধিকার থেকে, তা খুঁটিয়ে দেখছেন সরকারি আধিকারিকেরা। অন্যদিকে হাতি মৃত্যু আয়ত্তে আনতে বিদ্যুৎ বিভাগের সঙ্গে যৌথভাবে খুব শীঘ্রই কাজ শুরু করবে বনদপ্তর। আশ্বস্ত করেছেন আধিকারিকেরা...
Powered by Froala Editor