গত বছরের নভেম্বর মাসের কথা। শিক্ষা মন্ত্রালয় থেকে ঘোষণা করা হয়েছিল এবার ইঞ্জিনিয়ারিং পড়া যাবে মাতৃভাষাতেই। আইআইটি, এনআইটিগুলি থেকেই সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল ইংরাজি মাধ্যমে প্রযুক্তিবিদ্যা পঠনপাঠনের বাধ্যবাধকতা। তবে দানা বেঁধেছিল বিতর্ক। মাতৃভাষায় ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের পাঠ বিজ্ঞানচর্চার পরিধিকে যে সীমিত করে দেবে, তা নিয়েই আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন অধ্যাপকদের একাংশ। তবে এই পদক্ষেপে ঠিক কী মনে করছেন শিক্ষার্থীরা? এবার প্রকাশ্যে এল তাঁদের অভিমত।
অল ইন্ডিয়া কাউন্সিল অফ টেকনিক্যাল এডুকেশন (এআইসিটিই) সম্প্রতি একটি সমীক্ষা চালিয়েছিল এই বিষয়েই। নেওয়া হয়েছিল সারা ভারতেরই বিভিন্নপ্রান্তের এআইসিটিই অনুমোদিত ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের পড়ুয়াদের মতামত। মোট ৮৩ হাজার শিক্ষার্থী অংশ নিয়েছিল এই জাতীয় সমীক্ষায়। তার মধ্যে ৪৪ শতাংশ পড়ুয়া ইঞ্জিনিয়ারিং পাঠের মাধ্যম হিসাবে বেছে নিয়েছেন তাঁদের মাতৃভাষাকেই।
সমীক্ষা অনুযায়ী, তামিল এবং হিন্দি ভাষায় ইঞ্জিনিয়ারিং পাঠের চাহিদা সবথেকে বেশি। তারপরেই রয়েছে তেলেগু এবং মারাঠি। তুলনামূলকভাবে বাকি ১৮টি আঞ্চলিক ভাষার চাহিদা অনেকটাই কম। জরিপে অংশগ্রহণকারী স্নাতক ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে দ্বিতীয় (৪৪.৬%) এবং তৃতীয় বর্ষের (৪৫.৮%) পড়ুয়াদের মধ্যে মাতৃভাষায় চাহিদা সবথেকে বেশি।
জাতীয় শিক্ষানীতি ২০২০-তে বেশ কিছু বদল আনা হয়েছিল। প্রথম শ্রেণি থেকে শুরু করে উচ্চশিক্ষা পর্যন্ত মাতৃভাষায় শিক্ষার প্রসারের স্বপক্ষে কথা বলেছিলেন শিক্ষামন্ত্রী রমেশ পোখরিয়াল। ছাত্রছাত্রীদের একটি বড়ো অংশ যে তেমনই একটি শিক্ষাব্যবস্থা চাইছেন, তা স্পষ্ট হয়ে গেল সমীক্ষা থেকে। তবে এর পরেও থেকে যাচ্ছে বেশ কিছু প্রশ্ন। মাতৃভাষায় প্রযুক্তিবিদ্যার শিক্ষাগ্রহণের পর জাতীয় বা আন্তর্জাতিক কর্মক্ষেত্রে সমস্যার সম্মুখীন হবেন না তো শিক্ষার্থীরা? কর্পোরেট জগতের চাকরির জন্য পরীক্ষায় সত্যিই কি সুযোগ থাকবে মাতৃভাষার? বৃহত্তর অর্থে কর্ম এবং শিক্ষার গোটা সিস্টেমের পরিবর্তন না হলে, এই প্রকল্পই বুমেরাং হয়ে ফিরে আসতে পারে বলেই অভিমত অনেক বিশেষজ্ঞের।
আরও পড়ুন
ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে দ্বাদশ শ্রেণিতে বাধ্যতামূলক নয় অঙ্ক-পদার্থবিদ্যা!
Powered by Froala Editor