সম্প্রতি প্রকাশ পেয়েছে আত্মহত্যা সংক্রান্ত এনসিআরবির রিপোর্ট। আর সেই রিপোর্ট থেকেই জানা গেল, ভারতে ২০১৯ সালে ঘটে গেছে ১ লক্ষ সাড়ে ৩৪ হাজার আত্মহননের ঘটনা। তবে এর একটা বড়ো অংশই হল আর্থিক পিরামিডের নিচের স্তরে থাকা মানুষরা। কৃষক এবং শ্রমিক-মজুরেরা। এই পরিসংখ্যানই যে দেশের চরম আর্থিক অনটনের ছবি তুলে ধরছে তা বলাই বাহুল্য।
রিপোর্ট থেকে জানা যায়, ৫৯৫৭ জন কৃষক এবং ৪৩২৪ জন ক্ষেতমজুর আত্মহত্যা করেছেন ২০১৯ সালে। পাশাপাশি সাড়ে ৩২ হাজার শ্রমিক ও মজুর আর্থিক বোঝা টানতে অসমর্থ হয়ে বেছে নিয়েছেন আত্মহননের পথ। এই তালিকার শীর্ষেই রয়েছে মহারাষ্ট্রের নাম। তারপর কর্ণাটক, অন্ধ্রপ্রদেশ এবং তেলেঙ্গানা। মূলত দক্ষিণের রাজ্যগুলিতেই কৃষকদের আত্মহত্যার প্রবণতা যে বেশি, তাই উঠে আসছে পরিসংখ্যান থেকে। তবে বাংলায় গত বছর এই ধরণের কোনো ঘটনা ঘটেনি। যদিও গোটা দেশের মধ্যে আত্মহত্যার সংখ্যার নিরিখে তৃতীয় স্থানে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ।
বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকারের ক্ষমতায় আসার মূলমন্ত্রই ছিল অর্থনৈতিক অবস্থার বদল করা। জানানো হয়েছিল, আর্থিক দুর্গতদের পাশে দাঁড়ানো এবং দেশে কর্মক্ষেত্র তৈরি করবে সরকার। কিন্তু এই রিপোর্ট আরও একবার বুঝিয়ে দিল পুঁজিবাদ সমাজের খেটে-খাওয়া মানুষদের ঠেলে দিচ্ছে আরও ঘোর আর্থিক অনটনের ক্ষেত্রে। ২০১৯-এর রিপোর্ট হওয়ায়, এতে যে করোনা আবহের আর্থিক মন্দার প্রভাব রয়েছে, তেমনটাও নয়। তবে সরকারের এই ব্যর্থতা যেন আরও একবার উসকে দিচ্ছে এই বছর কৃষক-আত্মহত্যা বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কাকেই। প্রশ্ন উঠছে এই ঋণাত্মক জিডিপির সময়ে দাঁড়িয়েও যে ক্ষেত্রটি একটা বড়ো অঙ্ক এনে দিয়েছে সরকারকে। সেই ক্ষেত্রে কর্মরত মানুষরা আদৌ কি নিরাপদ রয়েছেন?
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
দেশে প্রতিদিন গড় আত্মহত্যা ৩৮৭ জনের, তৃতীয় স্থানে বাংলা : কারা বেছে নিচ্ছেন এই পথ?