এখনও অবধি সারা বিশ্বে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শিখরে পৌঁছায়নি। প্রতিদিনই বেড়ে চলেছে আক্রান্তের সংখ্যা। আর মার্চ-এপ্রিল মাস থেকেই এই সংক্রমণের জেরে কার্যত বন্ধ হয়ে আছে পৃথিবীর পাঠশালা। সংক্রমণ সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়ার মাস পাঁচেক পরও স্কুল, কলেজ খোলা যে কার্যত বিপজ্জনক, তাই উঠে এল ইউনিসেফ-এর সমীক্ষায়।
করোনা ভাইরাসের আবহে ভাইরাসের থেকে বাঁচার গুরুত্বপূর্ণ পথ হয়ে উঠেছে বারবার সাবান দিয়ে হাত ধোয়া এবং স্যানিটাইজ করা। তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার একটি রিপোর্ট জানাচ্ছে, পৃথিবীর মোট ৪০ শতাংশ স্কুলেই অনুপস্থিত হাত ধোয়ার সুবিধা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং ইউনিসেফের এই যৌথ সমীক্ষার ফলাফল রীতিমত চাঞ্চল্যকর।
পৃথিবীর প্রায় ৮১.৮ কোটি ছাত্র এই অব্যবস্থার শিকার। ফলে এই মুহূর্তে স্কুল খুললেও কোভিডের সংক্রমণ হওয়ার প্রবল ঝুঁকি থেকেই যাচ্ছে তাঁদের মধ্যে। এর মধ্যে মাত্র ৩৫.৫ কোটি ছাত্ররা হাত ধোয়ার জন্য জলের সরবরাহ বা পরিষেবা পায়। কিন্তু সেক্ষেত্রেও স্কুলে সাবানের ব্যবস্থা নেই কোনো। বাকিদের কাছে নেই সেই সুবিধাটুকুও।
ইউনিসেফ জানাচ্ছে এই বিপুল ছাত্র সংখ্যার এক তৃতীয়াংশই উপ-সাহারান অঞ্চলের শিশু। আফ্রিকার এই অঞ্চলে ১০টির মধ্যে ৭টি স্কুলেই হাত ধোয়া কিংবা স্যানিটাইজের কোনোরকমই কোনো পরিকাঠামো বা পরিষেবা নেই। এই সমীক্ষায় দেখা গেছে পৃথিবীর ৬০টি উন্নয়নশীল দেশের অবস্থা সবথেকে বেশি সংকটজনক। এমনকি এই দেশগুলিতে এক তৃতীয়াংশ স্কুল পড়ুয়ারা পানীয় জলের সরবরাহও পায় না।
চিন, নিউজিল্যান্ড, জার্মানি, ইতালি বা স্পেনের মত হাতে গোনা কয়েকটা দেশ ভাইরাসের সংক্রমণকে হার মানাতে পেরেছে। সেখানেই শুধু খুলেছে স্কুলগুলি। তবে এই দেশগুলিতেও বিক্ষিপ্তভাবেই এখনও ধরা পড়ছে নতুন করে ভাইরাসের সংক্রমণ। তবে বাকিরা প্রস্তুতি নিচ্ছে এই সংক্রমণের মধ্যেও স্কুল খোলার বিষয়ে। ইউনিসেফের তরফে লিখিত বিবৃতিতে এই দেশের সরকারগুলিকে অনুরোধ করে স্কুলের পরিকাঠামোতে জোর দেওয়ার জন্য। করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ আটকানোর জন্য অন্যান্য পরিকল্পনাগ্রহণের পাশাপাশি দরকার স্কুলগুলিতে উপযুক্তি স্বাস্থ্যবিধি অবলম্বনের। দরকার পরিমিত স্যানিটাইজের সামগ্রীর। এছাড়াও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গাইডলাইন অনুযায়ী নিয়মিত জীবাণুমুক্তিকরন হওয়া দরকার স্কুলের। অন্যথা পঠন-পাঠনে গুরুত্ব দিয়ে গিয়ে বিপদের দিকেই ঠেলে দেওয়া হবে পড়ুয়াদের...
আরও পড়ুন
করোনা-জয়ের পরেও আবার আঘাত; ১৪ জন নতুন করে আক্রান্ত নিউজিল্যান্ডে
Powered by Froala Editor