তাঁর জীবনের কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি, মৃত্যু নিয়েও রহস্যের অন্ত নেই। কেউ বলেন ১৮ আগস্ট ১৯৪৫ সালে বিমান দুর্ঘটনায় মারা গেছেন তিনি, কারোর আবার মত রাশিয়ায় পলায়নের দিকে। আবার কেউ বলেন ভারতেই ফিরে এসেছিলেন তিনি, গুমনামী বাবার ছদ্মবেশে। এতগুলো সম্ভাবনার সমাধান হয়নি আজও। সমাধানের জন্য যা যা সূত্র দরকার, তার অনেককিছুই লুকিয়ে ছিল কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে সংরক্ষিত ফাইলে। বলা হত, এই ফাইলগুলি প্রকাশ্যে আনলেই নাকি জানা যাবে নেতাজির মৃত্যুর প্রকৃত রহস্য।
অবশেষে, গতকাল কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে দাবি করা হল, নেতাজি ও আজাদ হিন্দ ফৌজ সংক্রান্ত সমস্ত ফাইল প্রকাশ্যে আনা হয়েছে। লোকসভায় সংস্কৃতি ও পর্যটনমন্ত্রী প্রহ্লাদ সিং প্যাটেল লিখিত জানান, সরকারের কাছে রক্ষিত নেতাজি-সংক্রান্ত যাবতীয় ফাইল এবার থেকে উন্মুক্ত। ন্যাশনাল আর্কাইভস অব ইন্ডিয়ায় প্রদর্শিত হচ্ছে সেই ফাইলগুলি। এছাড়াও দেখা যাবে www.netajipapers.gov.in-এও।
মোট ৩০৪টি রেকর্ড ও ফাইল প্রকাশ্যে আনা হয়েছে এবার। এর আগেও বিভিন্ন সময় ধাপে ধাপে প্রকাশ্যে আনা হয়েছিল নেতাজি-সংক্রান্ত ফাইলগুলি। সরকারের বিভিন্ন দপ্তর, যেমন প্রাইম মিনিস্টার’স অফিস, মিনিস্ট্রি অব এক্সটার্নাল অ্যাফেয়ার্স, ক্যাবিনেট সেক্রেটারিয়েট ইত্যাদি জায়গায় সংরক্ষিত ফাইল এবার জনসাধারণের সামনে এল, দাবি প্রহ্লাদ সিং প্যাটেলের।
তবে সরকারের পক্ষ থেকে এই কথা জানানো হলেও, কিঞ্চিৎ সন্দেহ থেকেই যায়। দীর্ঘদিন ধরেই ‘রাইট টু ইনফরমেশন অ্যাক্ট’-এর দৌলতে চন্দ্রচূড় ঘোষ, অনুজ ধর ও অন্যান্য নেতাজি-গবেষকরা বিভিন্ন তথ্য আদায় করেছেন সরকারের কাছ থেকে। অনুজ এও জানিয়েছিলেন, সরকারের কাছে এমন কিছু ‘টপ সিক্রেট’ ফাইল আছে, যা প্রকাশ্যে এলে নেতাজির অন্তিম পরিণতি সম্পর্কে স্পষ্ট জানা যাবে। বিভিন্ন মহল থেকেও এর ইঙ্গিত মিলেছে একাধিকবার। এমনকি এও শোনা যায়, আন্তর্জাতিক বিশৃঙ্খলাও তৈরি হতে পারে নেতাজিকে নিয়ে গোপন ফাইলগুলি প্রকাশ্যে এলে।
সরকারের দাবি, তাদের কাছে রক্ষিত সব ফাইলই প্রকাশ্যে এনে দেওয়া হল। সত্যিই কি তাই? তাহলে কি নেতাজি-রহস্যের সমাধান হবে এবার? দেখা যাক...