মাটির নিচে চাপা পড়ে যাওয়া এক প্রাচীন শহর। ঠিক যেন ‘সোনার শহর’। এমনটাই বলছেন প্রত্নতাত্ত্বিকরা। তবে এল-ডোরাডোর মতো কিছু নয়। আসলে ৩ হাজার বছর আগে হারিয়ে যাওয়া যে শহরের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে, তা নাকি সেই সময়ে বিশ্বের সবচেয়ে বড়ো শহর ছিল। মিশরের সাম্প্রতিক প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারকে ঘিরে তাই প্রত্নতাত্ত্বিকদের মধ্যে উৎসাহ তুঙ্গে। কায়রো শহর থেকে কিছুটা দক্ষিণে বালির নিচে প্রায় অবিকৃত অবস্থাতেই উদ্ধার হয়েছে এই শহরের ধ্বংসাবশেষ।
তুতেনখামেনের সমাধি আবিষ্কারের পর মিশরের ইতিহাসচর্চায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার হিসাবে ধরা যায় এই শহরটিকে। এমনটাই জানাচ্ছেন প্রত্নতাত্ত্বিকরা। কিন্তু কী আছে এই শহরের পিছনে? আসলে ৩ হাজার বছর আগে মিশরীয় সভ্যতা তার নিজের জৌলুস একইভাবে বজায় রাখতে পারলেও পাশাপাশি বেশ কিছু নতুন সভ্যতার জন্ম হয়ে গিয়েছে। মিশরীয়দের সঙ্গে তাঁদের আন্তর্জাতিক যোগাযোগও গড়ে উঠেছে একটু একটু করে। এই সময় মিশরের শ্রেষ্ঠত্বকে প্রমাণ করতেই নতুন করে উদ্যোগ শুরু করেছিলেন ফ্যারাওরা। এই সময়েই ফ্যারাও তৃতীয় আমেনহোতেফ এমন এক শহর তৈরি করেছিলেন, যা আকারে এবং জৌলুসে সেই সময়ের সমস্ত শহরকেই হার মানায়। ঐতিহাসিকরা বেশ কিছু নথিতে সেই শহরের কথা জানতে পারলেও তার সন্ধান পাননি এতদিন ধরে। প্রায় ২০০ বছর ধরে অনুসন্ধানের পর অবশেষে সেই শহরের সন্ধান পেলেন ঐতিহাসিকরা।
ঠিক এই সময় মিশর জুড়ে প্রত্নতাত্ত্বিকদের ব্যস্ততা তুঙ্গে। লকডাউনের কারণে দীর্ঘদিন বন্ধ ছিল পর্যটন ব্যবস্থা। এবার নতুন করে পর্যটন যেমন শুরু হয়েছে, তেমনই শুরু হয়েছে জাতীয় মিউজিয়াম তৈরির প্রকল্পও। ঠিক সেই সময়েই যেন ইতিহাসের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কারের একটির সাক্ষী থাকল মিশর। তৃতীয় আমেনহোতেফের সময় তৈরি যে শহর টিকে ছিল ফ্যারাও তুতেনখামেনের সময় পর্যন্ত। নতুন এই আবিষ্কার যে মিশরের অনেক অজানা ইতিহাসকে তুলে ধরবে, সে-কথা বলাই বাহুল্য।
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
লাপিস লাজুলি, শেয়াল দেবতা ও কলকাতার বুকে একটুকরো মিশরের হদিশ