২০৫০-এর মধ্যেই প্রবল জল-সংকটে ভুগবে দেশের ৩০টি শহর, জানাচ্ছে সমীক্ষা

শহর আছে। শহরে মানুষও আছে। তার সঙ্গে আছে অন্যান্য প্রাণী এবং উদ্ভিদও। কিন্তু কারোর জন্যই একটুও জল নেই। দৃশ্যটা বেশ ডিস্টোপিয়ান। তবে একদমই অবাস্তব নয়। পরিবেশের গতি যেদিকে এগোচ্ছে, তাতে খুব তাড়াতাড়ি এমন ভবিষ্যতের দিকেই এগিয়ে যেতে চলেছি আমরা। আর সম্প্রতি সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের বিশেষজ্ঞ সংস্থা ওয়ার্ল্ড ওয়াইল্ডলাইফ ফান্ডের পক্ষ থেকে প্রকাশিত হল একটি তালিকা। সেখানে ১০০টি শহরের নাম আছে। বলা হয়েছে ২০৫০ সালের মধ্যে এই ১০০টি শহরে ভয়ঙ্কর জল-সংকট দেখা দেবে। আর এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, ১০০টি শহরের মধ্যে ৩০টিই ভারতের শহর।

মাত্র বছরখানেক আগের কথা, চেন্নাই শহরের অবস্থা নিশ্চই আমরা এখনও ভুলে যাইনি। একেবারে জলশূন্য অবস্থা না হলেও মানুষের খাবার জল প্রায় ছিল না বললেই চলে। এমনকি দেখা গিয়েছে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা দিয়েও মানুষ এক লিটার জল কিনে খাচ্ছেন। আর যাঁদের সেই ক্ষমতা নেই? তেষ্টায় ছাতি ফেটে গেলেও কিছু করার ছিল না। সেই চেন্নাইয়ের পদাঙ্ক অনুসরণ করতে পারে আরও ৩০টি শহর। আর ডব্লিউ.ডব্লিউ.এফ-এর রিপোর্ট অনুযায়ী সেই তালিকায় রয়েছে দিল্লি, মুম্বাই, কলকাতা, অমৃতসর, পুনে, ইন্দোর, শ্রীনগর। সব শহরেই জনসংখ্যা যথেষ্ট বেশি।

তবে শুধু ভারতের অবস্থাই এমন ভয়াবহ নয়। রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে, ভারতকেও টেক্কা দিতে পারে চিন। ১০০টি শহরের মধ্যে ৫০টি আবার চিনের। বাকি সমস্ত দেশ মিলিয়ে আছে ২০টি শহর। ভারত এবং চিন, বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ জনবসতিপূর্ণ দুটি দেশ। আর এখানে জলের হাহাকার দেখা দেওয়া মানে লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবন নিয়ে সংশয় দেখা দেওয়া। অবশ্য একটু সচেতন হলেই এমন ঘটনা রুখে দেওয়া যায়। তার জন্য প্রয়োজন শুধু পরিবেশের দিকে একটু নজর দেওয়া এবং জল সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা। একটি জনপ্রিয় চৈনিক প্রবাদের সূত্র ধরে বলাই যায়, শেষ জলবিন্দুটি মুছে গেলে আমরা বুঝতে পারব, টাকা তৃষ্ণা মেটায় না।

Powered by Froala Editor