কলকাতার বুকের মধ্যেই যেন এক টুকরো বিলেত। হ্যাঁ, কথা হচ্ছে পার্ক স্ট্রিট নিয়েই। অনেকের কাছেই যা পরিচিত ‘প্যারিস অফ ইস্ট’ নামে। ভারতের স্বাধীনতার ৭ দশক পেরিয়ে আজও সাহেবিয়ানার ছাপ রয়েই গেছে পার্ক স্ট্রিটে। আজও অপরিবর্তিত রয়ে গেছে তার সার্বিক চেহারা, সংস্কৃতি, বৈচিত্র্য। এবার পার্ক স্ট্রিটের (Park Street) এই বৈচিত্র্যকেই স্বীকৃতি জানাল ইন্ডিয়ান ট্রাস্ট ফর আর্ট অ্যান্ড কালচার হেরিটেজস। হেরিটেজ (Heritage Tag) তকমা পেল পার্ক স্ট্রিটের তিনটি আইকনিক রেস্তোরাঁ (Restaurants)— মোকাম্বো, কোয়ালিটি এবং ট্রিংকাস।
তিনটি রেস্তোরাঁই চালু হয়েছিল পঞ্চাশের দশকে। পরবর্তী ছ’দশকে কলকাতার সংস্কৃতির প্রতীক হয়ে উঠেছে সংশ্লিষ্ট রেস্তোরাঁগুলি। হয়ে উঠেছে ল্যান্ডমার্ক। আজও সন্ধে গড়ালেই এসব রেস্তোরাঁয় আয়োজন হয় লাইভ সঙ্গীতানুষ্ঠানের। কোথাও বা বেজে ওঠে জ্যাজ সঙ্গীত। সময় নিজের তালে গড়ালেও বদল আসেনি খাবারের মেনুতে কিংবা অভ্যন্তরীণ সজ্জায়।
গতকাল ৩টি রেস্তোরাঁর সদর দরজাতেই বসে হেরিটেজ প্লেক। আনুষ্ঠানিকভাবে হেরিটেজ ট্যাগও দেওয়া হয় জনপ্রিয় রেস্তোরাঁগুলিতে। তবে আজ নয়, এই ঘোষণা হয়েছিল আড়াই বছর আগে। ২০১৯ সালের একেবারে শেষ দিক সেটা। হেরিটেজ স্বীকৃতির জন্য বেছে নেওয়া হয়েছিল কলকাতার ১৫টি রেস্তোরাঁকে। যার মধ্যে মোকাম্বো, ট্রিংকাস এবং কোয়ালিটি ছাড়াও রয়েছে ভীম নাগ, ইউ চিউ, গিরিশ চন্দ্র দে, নকুড় চন্দ্র নন্দী, অ্যালেনস কিচেন, কেসি দাস, কফি হাউস এবং প্যারামাউন্ট। কিন্তু তার ঠিক পরেই করোনা পরিস্থিতির কারণে ঘোষিত হয়েছিল লকডাউন। দীর্ঘদিনের জন্য বন্ধ ছিল কলকাতার রেস্তোরাঁগুলি। সেই কারণেই পিছিয়ে দেওয়া হয় হেরিটেজ তকমা প্রদানের অনুষ্ঠান।
সাম্প্রতিক সময়, মহামারীর প্রকোপ কমেছে খানিকটাই। পাল্লা দিয়ে সচল হয়েছে কলকাতার রেস্তোরাঁগুলিও। তবে অর্থনৈতিক ধাক্কা এখনও সম্পূর্ণভাবে কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হয়নি তাদের ক্ষেত্রে। এই সংকটকালীন সময়ে হেরিটেজ তকমা বাণিজ্যিকভাবে খানিক সুবিধা করে দিতে পারে প্রাচীন রেস্তোরাঁগুলিকে। এমন চিন্তাভাবনা থেকেই সম্প্রতি প্লেক প্রদানের উদ্যোগ নেয় ইন্টাক হেরিটেজ কমিশন। প্রাথমিক পর্যায়ে পার্ক স্ট্রিটের তিনটি রেস্তোরাঁতে ‘ব্লু প্লেক’ বসল রবিবার। একইভাবে অক্টোবরের মধ্যেই স্বীকৃতি জানানো হবে অন্যান্য রেস্তোরাঁ ও খাবারের দোকানগুলিকেও।
আরও পড়ুন
'ভারতের কিটস' তরু দত্তের স্মৃতি রক্ষার্থে উদ্যোগ হেরিটেজ কমিশনের
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
কাদম্বিনী গঙ্গোপাধ্যায়ের বাড়ি সংরক্ষণে উদ্যোগী হেরিটেজ কমিশন