ম্যাজিককে হাতিয়ার করেই পরিবেশ সচেতনতা তৈরির লড়াই ভারতীয় ম্যাজিশিয়ানদের

“দূষণ ও জলবায়ু পরিবর্তন কীভাবে প্রভাবিত করছে পরিবেশকে— সেটা ম্যাজিকের মাধ্যমে তুলে ধরার চেষ্টা করব আমরা। প্রতিদিনই এই থিমের ওপর বেশ কিছু ম্যাজিক থাকবে। থাকবে বিশেষ আয়োজন। গোটা মাঠজুড়ে রাখা হবে সচেতনতামূলক পোস্টার।”

বলছিলেন ভারতীয় ম্যাজিশিয়ানদের সংগঠন ‘ফিমা’-র কর্ণধার সঞ্জয় চট্টোপাধ্যায়। 

আগামী ১৭ ফেব্রুয়ারি থেকে তিলোত্তমা কলকাতাই (Kolkata) হয়ে উঠতে চলেছে একটুকরো হগওয়ার্টস। শহরের বুকে আয়োজিত হতে চলেছে ৩ দিন-ব্যাপী ম্যাজিকের আসর— ম্যাজিক মেলা (Magic Fair)। আর এবার এই মেলার থিম ‘সবুজ পৃথিবী, বাঁচুক প্রাণ’। সবমিলিয়ে এই মেলায় অংশ নিচ্ছেন ভারতের বিভিন্ন প্রান্তের ৫০০-৬০০ ম্যাজিশিয়ান।

২০০৯ সাল থেকে, প্রতি বছরই কলকাতায় এই অবাক দুনিয়ার নির্মাণ করে থাকে ‘ফিমা’। উল্লেখ্য, জন্মলগ্নে কলকাতার এই মেলাই ছিল ভারতের ম্যাজিকমেলা। এবারেও অন্যথা হচ্ছে না তার। আর মাত্র সপ্তাহ দেড়েকের অপেক্ষামাত্র। আগামী ১৭ ফেব্রুয়ারি থেকে কলকাতার মোহরকুঞ্জে বসতে চলেছে এই ম্যাজিকের আসর। এ-মেলার উদ্বোধনের রীতিটিও বেশ অদ্ভুত। কালো কাপড়ে চোখে বেঁধে গাড়ি ও বাইক চালিয়েই মেলার উদ্বোধন করবেন ম্যাজিশিয়ানরা। জন্মলগ্ন থেকে এমনটাই হয়ে আসছে প্রতিবছরই। এবারেও সেই দৃশ্য দেখতে পাবেন উপস্থিত দর্শকরা, জানালেন ‘ফিমা’-কর্ণধার। 

“ম্যাজিক মেলা বলা হলেও, ম্যাজিক এবং অ্যালায়েড আর্টস নিয়েই এই মেলা। ম্যাজিকের তো অনেক ধরনের বিভাগ আছে। কনজিউরিং ম্যাজিক ২০-২৫ জন মানুষের সঙ্গে দেখানো যায়, ক্লোস আপ ১০-১২ জনের সামনে। আমাদের ম্যাজিক মেলায় যেমন স্টেজে বিভিন্ন ম্যাজিক দেখানো হবে, তেমনই মাঠজুড়ে বিভিন্ন ধরনের ম্যাজিকের ছোটো ছোটো এরিনা থাকবে”, জানালেন সঞ্জয়বাবু। 

হ্যাঁ, এ যেন এক সব পাই-এর দুনিয়া। কোথাও দেখানো হবে ভেন্ট্রিলোক্যুইজম, কোথাও কনজিউরিং, কোথাও আবার হাত-সাফাই বা জাগলিং। ভারতের বুক থেকে হারিয়ে যেতে বসা মাদারিরাও অংশ নিচ্ছেন এই মেলায়। সঞ্জয়বাবুর কথায়, “মাদারিদের খেলা বলতে দড়ির ওপর দিয়ে হেঁটে যাওয়া নয়, আসল ম্যাজিক। সাধারণত, ময়দানে খেলা দেখাতে মাদারিদের আর অনুমতি দেওয়া হয় না। তবে এবার আমরা মাদারিদের খেলা দেখতে পাব। পাণ্ডুয়া এবং জয়পুর থেকে ওঁরা আসছে আমাদের মেলায়।”

ম্যাজিক ছাড়াও, অ্যালায়েড আর্টস বিভাগে থাকছে স্যান্ড আর্ট, হ্যান্ড-শ্যাডোগ্রাফির আয়োজন। থাকছে পাপেট-ফায়ারও। অবশ্য শুধু প্রদর্শনীও নয়, গোটা দিনজুড়েই সেখানে আয়োজিত হবে ওয়ার্কশপ। খুদে ম্যাজিকভক্তরা সেখানে গিয়ে সারাদিন ধরেই শিখতে পারবে কোনো-না-কোনো জাদু-কৌশল। দুপুর একটা থেকে সন্ধ্যে সাড়ে ছ’টা পর্যন্ত চলবে এই ওয়ার্কশপ এবং অ্যারেনা প্রদর্শনী। পরবর্তীতে আড়াই ঘণ্টা ম্যাজিক দেখানো হবে মঞ্চে। সবমিলিয়ে তিন দিনের জন্য যেন কলকাতা যেন হয়ে উঠবে জে.কে. রাউলিং-এর উপন্যাসের প্রেক্ষাপট। আর তার জন্যই প্রহর গোনা শুরু করে দিয়েছে নগরবাসী…

Powered by Froala Editor