করোনা আবহে নিট, জেইই পরীক্ষার কর্মসূচী ঘোষণার পরই উত্তাল হয়ে উঠেছিল দেশ। কিন্তু তাতে টনক নড়েনি কেন্দ্রের। পর্যালোচিত সূচি মেনেই চলছে পরীক্ষার কর্মযজ্ঞ। কিন্তু এই সূচির কারণেই অনেকের পরীক্ষা দেওয়া দায় হয়ে উঠলে, তা স্পষ্ট পরীক্ষার্থীদের সংখ্যা থেকেই।
জেইই পরীক্ষার প্রথম তিনটি দিনে পরীক্ষা ফেলা হয়েছিল ৪ লক্ষ সাড়ে ৫৮ হাজার পরীক্ষার্থীর। তার মধ্যে তার মধ্যে প্রায় ১লক্ষ ১৪ হাজার ছাত্র-ছাত্রীই গেলেন না পরীক্ষা দিতে। যার হার ২৫ শতাংশ। প্রথমদিন পরীক্ষা দিয়েছিলেন মাত্র ৫৬ শতাংশ ছাত্র-ছাত্রী। পরের দু’দিনে এই শতাংশ বেড়ে দাঁড়ায় যথাক্রমে ৮১ ও ৮২ শতাংশ।
দেশের করোনা পরিস্থিতি প্রতিদিনই খারাপ হচ্ছে একটু একটু করে। একদিনে ৮৩ হাজার সংক্রমণের রেকর্ড তৈরি হয়ে গেছে দেশে। এই আবহে অনেকেই বাড়ির বাইরে বেরনোর ভরসা পাচ্ছেন না। অন্যদিকে যাতায়াতের জন্যও সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে অনেককেই। এখনও ২ দিনের পরীক্ষা বাকি। ফলে অনুপস্থিত পরীক্ষার্থীদের সংখ্যা যে আরও বাড়বে, তা বলাই বাহুল্য।
পরীক্ষার হলে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার কথা ভেবেই পরীক্ষাকেন্দ্রের সংখ্যা ৫৭০ থেকে বাড়িয়ে ৬৬০ করেছিল এনটিএ। অ্যাডমিট কার্ড চেকিংয়ের জন্য বসানো হয়েছিল বারকোড রিডারও। পরীক্ষাকেন্দ্রের গেটে মজুর রাখা হয়েছিল ছাত্রদের জন্য স্যানিটাইজারের। কিন্তু বিধি মেনে এইসব প্রতিরক্ষাসূচক কর্মসূচি নেওয়ার পরেও প্রশ্ন থেকে যাচ্ছিল তাঁদের নিরাপত্তা নিয়ে। কেন্দ্র অস্বীকার করলেও রাস্তায় বিপুল মানুষের ঢলে সংক্রমণ হওয়ার আশঙ্কা রয়েই যাচ্ছিল। সেই আশঙ্কা থেকেই পরীক্ষাকেন্দ্রে গেলেন না এত এত শিক্ষার্থী। নষ্ট হল সারা বছরের প্রস্তুতি। একদিকে যেমন সরকার জানাচ্ছে অত্যন্ত প্রয়োজন না হলে বাড়ির বাইরে না বেরোতে, ঠিক সমান্তরালেই সাজানো হচ্ছে পড়ুয়াদের পরীক্ষার সূচিও। কেন্দ্রের এই দ্বিচারিতা নিয়ে প্রশ্ন কিন্তু থেকেই যায়। ছাত্র-ছাত্রীদের ‘বছর নষ্টে’র এই দায় কি আদৌ স্বীকার করবে কেন্দ্র?
আরও পড়ুন
বাড়িতে বসে, বই খুলেই পরীক্ষা; কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের নয়া সিদ্ধান্ত ও কিছু সংশয়
Powered by Froala Editor