মমির মুখে সোনার জিভ! কফিনের ঢাকনা খুলতেই অবাক প্রত্নতাত্ত্বিকরা

কোনো পিরামিড নয়, পাহাড় আর পাথুরে জমির মধ্যেই এতদিন ধরে চাপা ছিল বেশ কয়েকটি কফিন। মিশরের ট্যাপসিরিস ম্যাগনা সাইটে সম্প্রতি এমনই ১৬টি প্রাচীন সমাধি খুঁজে পেলেন গবেষকরা। তবে এই কফিন খুঁজে পাওয়াই মূল বিষয়বস্তু নয়। প্রত্নতাত্ত্বিকরা চমকে উঠলেন একটি সারকোফেগাস খুলেই। একটি মমির মুখের ভেতর থেকে যেন ঠিকরে আসছে আলো। আসলে তার মধ্যে শায়িত রয়েছে যে মমি, তার জিভ তৈরি সম্পূর্ণ সোনা দিয়ে।

অনুসন্ধানটির সঙ্গে জড়িত ছিলেন সান্টো ডোমিংগো বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষকদল। বিগত এক দশকেরও বেশি সময় ধরেই তাঁরা গবেষণা করছেন ট্যাপসিরিস ম্যাগনা সাইটে। তবে এমন ঘটনা এই প্রথম। অন্য কোনো ঐতিহাসিকদেরও এমন পূর্ব-অভিজ্ঞতা আছে বলেই উল্লেখ নেই কোথাও।

সাধারণত মমি তৈরির সময় শরীরের ভেতর থেকে বার করে নেওয়া হত সমস্ত নাক, জিভ, অন্যান্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ, মস্তিষ্ক— সবই। শুধু অক্ষত রাখা হত হৃদপিণ্ডকে। পরবর্তীকালে তা শুকনো করে আবার ভরে দেওয়া হত কফিনের মধ্যে। গবেষকদের প্রাথমিক ধারণা এক্ষেত্রে ওই ব্যক্তির জিহ্বা অপসারণের পর নতুন স্বর্ণ-জিহ্বা প্রতিস্থাপন করা হয়েছিল বিশেষ কোনো উদ্দেশ্যে। মনে করা হচ্ছে, মৃত্যু-পরবর্তী জীবনের বিচারের দেবতা ওসিরিসের সঙ্গে যাতে কথা বলতে পারে ওই ব্যক্তি, সে জন্যই এমন ব্যবস্থা নিয়েছিলেন মিশরীয়রা।

সমাধিটির বয়স প্রায় ২ হাজার বছর। সেসময় গ্রিক ও রোমান সাম্রাজ্যের যথেষ্ট প্রভাব মিশরজুড়ে। পাথুরে জমিতে কফিন বসানোর চল সেই সময় থেকেই এসেছিল মিশরে। সদ্য খুঁজে পাওয়া মমিগুলির বেশ কয়েকটির ক্ষেত্রেই নষ্ট হয়ে গেছে দেহের অংশ। তবে পাথরের তৈরি আনুবিসের মুখোশগুলি এখনও অক্ষত রয়েছে সবই। সেইসঙ্গে বেশ কয়েকটি পাথরের মূর্তিও পাওয়া গেছে কফিনের মধ্যে। তবে মমির দেহের মধ্যে সোনার জিভ সংযোজনের বিষয়ে এখনও কাটছে না রহস্য। অভিমত জানালেও বিষয়ট নিয়ে বিস্তারিত গবেষণা দরকার বলেই জানাচ্ছেন প্রত্নতাত্ত্বিকরা…

Powered by Froala Editor