একজন, দুজন নয়। আগামী সম্পাদকের বিরুদ্ধে প্রকাশকের কাছে চিঠি জমা দিলেন ‘টিন ভগ’ অনলাইন মিডিয়ার একসঙ্গে ২০ জন কর্মী। আন্তর্জাতিক মিডিয়া-হাউস কন্ডে নাস্ট চলতি মাসের শুরুতেই ঘোষণা করেছিল সংবাদমাধ্যম ‘ভগ’-এর শাখাপ্রতিষ্ঠান ‘টিন ভগ’-এর নতুন সম্পাদক হতে চলেছেন অ্যালেক্সি ম্যাককমোন্ড। আর তারপরেই প্রতিবাদে সরব হয়ে ওঠেন কর্মচারীরা। তুলে আনা হয় অ্যালেক্সির বিরুদ্ধে বর্ণবাদের অভিযোগ।
বছর দশেক আগের কথা। ম্যাককমোন্ড তখনও শিক্ষার্থী। ২০১১ সালে ট্যুইটারে বর্ণবাদমূলক বেশ কিছু কথা ধারাবাহিকভাবে পোস্ট করেছিলেন তিনি। যা মূলত এশিয়-আমেরিকানদের বিরুদ্ধেই। সেসময় সেইভাবে ট্যুইটগুলো নিয়ে কোনো সরগরম না হলেও, ২০১৮ সালে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়ে তাঁর করা মন্তব্যগুলির ছবি। ২০১৯ সালে সেই মন্তব্যের জন্য সামাজিক মাধ্যমে ব্যক্তিগতভাবে ক্ষমাপ্রার্থনাও করেছিলেন অ্যালেক্সি। তবে চলতি সপ্তাহে আরও একবার উঠে এল সেই প্রসঙ্গই।
এর আগে অ্যালেক্সি রাজনৈতিক ওয়েবসাইট অ্যাক্সিওসের হয়ে কাজ করতেন। গত মাসে মার্কিন প্রদেশে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছিল সঙ্গী টিজে ডাকলো-র সঙ্গে তাঁর আচরণের কেলেঙ্কারি। আর তারপরেই বাইডেনের যোগাযোগের সহকারী পদ থেকে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন তিনি।
‘টিন ভগ’-এর প্রধান-সম্পাদক হিসাবে তাঁর নাম ঘোষণার পর থেকেই পাঠকদের রোষ আছড়ে পড়েছিল ভগের অফিসে। সাম্প্রতিক সময়ে মার্কিন প্রদেশে বার বার আঙুল উঠেছে এশিয়াবাসীদের বিরুদ্ধে। যেহেতু করোনাভাইরাস মহামারীর সূত্রপাত হয়েছিল চিনে, তাই কোনো বিবেচনা না করেই বার বার কটূক্তির শিকার হয়েছেন প্রবাসী এশিয়রা। চলতি বছরে যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় আড়াই হাজারেরও বেশি এমন হেনস্থার ঘটনা ঘটেছে। যা আরও উসকে দিয়েছে অ্যালেক্সির বিরুদ্ধে সাধারণের ক্ষোভ।
আরও পড়ুন
আত্মহত্যার পরিস্থিতে পৌঁছেছিলেন মেগান, সরিয়ে রাখা হয়েছিল হ্যারির থেকেও!
নতুন মুখ্য সম্পাদকের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া প্রতিটি সাংবাদিকেরই বক্তব্য, তাঁদের এই অবস্থান সম্পূর্ণ পাঠকদের পক্ষে। সমাজের সম্প্রীতি বজায় রাখতে অ্যালেক্সির অধীনে কাজ করা তাঁদের পক্ষে সম্ভব নয় বলেই জানাচ্ছেন তাঁরা। যদিও এই ঘটনার পরে পুনরায় প্রকাশ্যে ক্ষমা চেয়েছেন অ্যালেক্সি ম্যাককমোন্ড। কিশোর অবস্থায় খানিকটা অজ্ঞাত হয়েই এই ধরণের মন্তব্য করেছিলেন, তাও স্বীকার করে নিয়েছেন তিনি। তবে সাংবাদিক হিসাবে কাজ করার সময় বিগতও কয়েক বছরের অভিজ্ঞতা বৈচিত্রময়তা এবং ন্যায়ের সম্পর্কে তাঁর ধারণা বদলে দিয়েছে পুরোপুরিভাবে। একজন নিরপেক্ষ সাংবাদিক হিসাবে বর্ণবাদের বিরুদ্ধে দ্বিগুণ পরিশ্রম করার পূর্ণ প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন অ্যালেক্সি।
কথায় আছে, ‘ধর্মের কল বাতাসে নড়ে’। এখন তা হাড়ে হাড়ে যেন টের পাচ্ছেন মার্কিন সংবাদ-তারকা। বহুবছর আগের করা চরমপন্থী মনোভাবের মন্তব্যগুলি হঠাৎ এভাবে যে কাঁটা হয়ে ফিরে আসবে তাঁর কাছে, কে-ই বা জানত। আগামী ২৪ মার্চ থেকে ‘টিন ভগ’-এর দায়িত্ব নেওয়ার কথা অ্যালেক্সির। তার আগেই বড়ো ধাক্কা খেলেন তিনি। তবে ক্ষমাপ্রার্থনাতেই এই বিতর্কের শেষ কিনা, তা দেখার জন্যই মুখিয়ে রয়েছেন বিশ্ববাসী…
আরও পড়ুন
নিয়ামগিরিতে বক্সাইট খনি স্থাপনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ, গ্রেপ্তার আদিবাসী নেত্রী কুনি সিকাকা
Powered by Froala Editor