১৮ হাজার বছরের পুরনো শঙ্খে ফুঁ, বেরিয়ে এল সুরেলা আওয়াজ!

লক্ষ্মীবার হোক বা যে কোনো শুভ অনুষ্ঠান, শাঁখের আওয়াজ না থাকলে আমেজটাই আসে না। সেই কবে থেকে ঠাকুরের সিংহাসনে জায়গা করে নিয়েছে সে। এবার যদি প্রশ্ন করি, আপনার বাড়িতে যে শাঁখটি আছে, সেটি কত পুরনো? হয়তো কর গুনে বলেও দেবেন। এবার যদি বলি, এমন শাঁখও আছে, যা ১৮ হাজার বছরের পুরনো? আর তা আজও বেশ ভালোমতো ব্যবহার করা যায়… 

শাঁখ বা শঙ্খ আসলে সামুদ্রিক প্রাণীর শক্ত খোলস ছাড়া আর কিছুই নয়। আর সেটাই আজ পরিণত হয়েছে বাদ্যযন্ত্রে। শাঁখ তো একপ্রকার বাদ্যযন্ত্রই বটে! ফ্রান্সের টুলোঁ শহরের ন্যাচারাল হিস্টোরি মিউজিয়ামেই রয়েছে এরকম একটি শঙ্খ। বাদ্যযন্ত্র হিসেবে নয়; প্রাচীন প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন হিসেবেই সেখানে জায়গা পেয়েছে এটি। ১৯৩১ সালে ফ্রান্সেই একটি প্রাচীন গুহা আবিষ্কার করার সময় এই শঙ্খটি পাওয়া যায়। প্রত্নতাত্ত্বিকদের অনুমান, এর বয়স অন্তত ১৮ হাজার বছর। গুহাটি সমুদ্র বা নদী থেকে বেশ অনেকটা দূরে। তাহলে সেখানে এমন শাঁখ এল কেমন করে? তাহলে নিশ্চয়ই মানুষেরও বসবাস ছিল এখানে। অনুসন্ধানের পর সেই চিহ্নও পাওয়া গেল। ভেতরে আঁকা গুহাচিত্র ও অন্যান্য নিদর্শন দেখে বিশেষজ্ঞরা নিশ্চিত, আদিম মানুষের বাসস্থান ছিল এটি। আর তারাই হয়তো পানপাত্র হিসেবে এই শঙ্খটিকে ব্যবহার করত। 

সাম্প্রতিক সময় নতুন করে শাঁখটির পরীক্ষা করা হয়। টুলোঁ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতাত্ত্বিকদের একটি দল পরীক্ষা করার সময় বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ জিনিস খুঁজে পান। আর তখনই শঙ্খের মধ্যে আবিষ্কৃত হয় বাদ্যযন্ত্রের সুর। প্রায় ১৮ হাজার বছর আগের শাঁখে ফুঁ দিলে কি সত্যিই আওয়াজ বেরোবে? ভেঙে যাবে না তো? একটা সংশয় তো ছিলই। হর্ন ইনস্ট্রুমেন্ট বাজান এমন এক শিল্পীকেও এই কাজে যুক্ত করা হয়। কিন্তু না, শঙ্খটির বিন্দুমাত্র ক্ষতি হয়নি। বরং বেশ সুরেলা আওয়াজই বেরিয়েছে। আপাতত ঐতিহাসিকদের মতে, এটিই এখনও পর্যন্ত পৃথিবীর প্রাচীনতম হর্ন ইনস্ট্রুমেন্ট বা বাদ্যযন্ত্র। এত বছর ধরে মিউজিয়ামে রাখা ছিল; কিন্তু এমন আশ্চর্য জিনিসটি আবিষ্কারই করা হয়নি। ভাবুন একবার! 

Powered by Froala Editor

আরও পড়ুন
১৭৫ বছরের পুরনো মিষ্টির দোকান, সেখানেই তৈরি বিশ্বের প্রথম রসগোল্লা তৈরির যন্ত্র