সারা পৃথিবীতে একচেটিয়া যেন ক্ষমতা কায়েম করেছে করোনা ভাইরাস। মানুষের শরীরের পাশাপাশি মহামারীর শুরুতেই বাঘ এবং পোষ্য বিড়ালের দেহেও মিলেছিল ভাইরাসের অস্তিত্ব। তবে বন্যপ্রাণীদের মধ্যে সেইভাবে সংক্রমণের ঘটনা ঘটেনি এখনও। এবার সেই আশঙ্কাই তুলে আনলেন বিজ্ঞানীরা। জানালেন সামুদ্রিক স্তন্যপায়ীদের মধ্যে রয়েছে সংক্রমণের বিপুল সম্ভাবনা।
মানুষের শরীর থেকেই বন্যপ্রাণীদের সংক্রমিত হওয়ার ঘটনাটিকে বিজ্ঞানের পরিভাষায় বলে ‘রিভার্স জুওনটিক ট্রান্সমিশন’। কোভিড-১৯ ছাড়াও যে কোনো ভাইরাসের ক্ষেত্রেই ঘটতে পারে এমনটা। কিন্তু কীভাবে বাড়ছে সামুদ্রিক প্রাণীদের সংক্রমিত হওয়ার সম্ভাবনা? কারণ মানুষের ন্যূনতম সংস্পর্শে আসা তারাই। তবে?
বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, মহামারীর আবহে চিকিৎসাগত বর্জ্য অধিকাংশ সময়ই নষ্ট করে ফেলা হচ্ছে না। শহরের নর্দমার মাধ্যমে তা বাহিত হয়ে গিয়ে মিশছে সমুদ্রের জলে। আর সেখান থেকেই ভাইরাসের সংস্পর্শে আসছে তারা। আশ্চর্যের ব্যাপার হল অধিকাংশ শহরেই বর্জ্য জল পরিশোধনের জন্য প্ল্যান্ট থাকলেও, বেশিরভাগ সময়ই তা কাজ করে না সঠিকভাবে। ফলে সমুদ্র দূষণ হয়ে চলেছে অনবরত। তবে মাছ কিংবা অন্যান্য প্রাণীদের থেকে সামুদ্রিক স্তন্যপায়ীদের শারীরিক প্রক্রিয়া অনেকটাই এক মানুষের সঙ্গে। তাই বিপজ্জনক পরিধির মধ্যে রয়েছে তারাই।
মানুষের শরীরে ভাইরাসের সংক্রমণের পর একটি বিশেষ অ্যামাইনো অ্যাসিডের মাধ্যমে শুরু হয় প্রোটিন তৈরি। সেই প্রোটিনের জিনগত বিশ্লেষণ করেই বিজ্ঞানীরা তার তুলনা করেন সামুদ্রিক স্তন্যপায়ী প্রাণীদের সঙ্গে। তাতেই আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য। দেখা যায়, ১৫টি সামুদ্রিক প্রাণীর ক্ষেত্রে ভাইরাস সংক্রমণের ঘটনায় অস্বাভাবিকতার কিছুই নেই। তার মধ্যে রয়েছে তিমি, শিল, ডলফিন এবং শুশুকের বিভিন্ন প্রজাতি।
গবেষণার মূল অধ্যাপক ডঃ গ্রাহাম ডেলাইরে জানাচ্ছেন এই ১৫টি প্রজাতিই বর্তমানে রয়েছে রেডবুকে। বিলুপ্তপ্রায় প্রাণীগুলির অস্তিত্বই হারিয়ে যেতে পারে ভাইরাসের সংক্রমণে। আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা যে তাদের শুধু দুর্বল করে দেবে তাই নয়, হৃদযন্ত্র এবং ফুসফুসে প্রভাব ফেলার কারণে সামুদ্রিক প্রাণীদের ক্ষেত্রে ভয়ঙ্কর মাত্রা নিতে পারে মৃত্যুহার। কিন্তু এই সমস্যার সমাধান খুঁজতে কতটা ঐক্যবদ্ধভাবে দায় নেবে পৃথিবীর সকল রাষ্ট্রের প্রশাসন? উত্তর অজানা...
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
সংখ্যা মাত্র ২০০, বিপন্ন অবস্থাতেই আবিষ্কার বানরের নতুন প্রজাতি