দীর্ঘ অতিমারী পেরিয়ে কয়েকমাস হল স্কুল-কলেজে পড়ুয়াদের ভিড় জমতে শুরু করেছিল। আচমকাই আবারও বন্ধ হয়ে গেল সব। শুধুই স্কুল-কলেজ নয়, বন্ধ করোনার ভ্যাকসিনেশন সেন্টারগুলিও। কারণ আর কিছুই না, গত কয়েকদিন ধরে প্রবল তাপপ্রবাহে বিপর্যস্ত গোটা কানাডা। উষ্ণতা কোথাও কোথাও পৌঁছে গিয়েছে ৪৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসের উপরে। ক্রান্তীয় অঞ্চলে এই উষ্ণতা খুব বেশি মনে না হলেও প্রায় মেরু অঞ্চলের কাছাকাছি কানাডায় এই তাপপ্রবাহ নজিরবিহীন।
সাধারণত কানাডার গ্রীষ্মকালীন তাপমাত্রা থাকে ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের আশেপাশে। কোথাও কোথাও ৪০ ডিগ্রি ছুঁয়ে যায় পারদস্তর। কিন্তু এবছর গ্রীষ্মের শুরুতেই সেই সীমা অতিক্রম করে গিয়েছে। আবহাওয়াবিদরা সতর্ক করেছিলেন আগেই। সেই সতর্কতার কথা মাথায় রেখেই দ্রুত ব্যবস্থা নিয়েছে সরকারও। এক সপ্তাহ আগেই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে সমস্ত স্কুল-কলেজ এবং অফিস। চারদিন ধরে বন্ধ করোনা ভ্যাকসিনেশন সেন্টারও। এমনকি পৌরসভাগুলি বাধ্য হয়ে রাস্তার ধারে জলের ঝরনার ব্যবস্থাও করেছে। আর শারীরিক দূরত্ববিধি অস্বীকার করেই সেখানে ভিড় জমাচ্ছেন মানুষ।
গতকাল ভ্যাঙ্কুবার শহরের তাপমাত্রা পৌঁছেছিল ৪৯.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। ১৯৪০ সাল, অর্থাৎ যেদিন থেকে দৈনিক তাপমাত্রার হিসাব সংরক্ষণ করা আছে, সেদিন থেকে কোনোদিন তাপমাত্রা এই উচ্চতায় পৌঁছয়নি। এর আগের দুদিনের তাপমাত্রাও ছিল তখনও পর্যন্ত ইতিহাসের সর্বোচ্চ। আর এই প্রবল উষ্ণতায় অসুস্থ হয়ে পড়ছেন বহু মানুষ। গত ১৫ দিনে ভ্যাঙ্কুবার শহরেই অন্তত ৫৬ জন মানুষের মৃত্যু হয়েছে তাপপ্রবাহের কারণে। আর গোটা কানাডায় সংখ্যাটা ইতিমধ্যে ১৩৫-এর বেশি। ঠিক কী কারণে এই তাপপ্রবাহ শুরু হয়েছে, বা কবে এর থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে, সে-বিষয়ে স্পষ্ট কিছুই বলতে পারছেন না আবহাওয়াবিদরা। শুধুই কানাডা নয়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উত্তরাঞ্চলেও শুরু হয়েছে তাপপ্রবাহ। প্রত্যক্ষ কারণ যাই হোক, এর পিছনে যে আসলে পরিবেশ দূষণই দায়ী, তেমনটাই মনে করছেন অনেকে।
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
বারবার ঘূর্ণিঝড়ে বিপর্যস্ত বাংলা, সমুদ্রের উষ্ণতা বৃদ্ধিই একমাত্র কারণ?