১২ মিলিয়ন বছরের পুরনো কাঁকড়ার জীবাশ্ম উদ্ধার নিউজিল্যান্ডে

জীবাশ্মবিদ হতে গেলে যদি কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি প্রয়োজন হয়, তবে সেসব তাঁর নেই। যা আছে তা হল নতুন কিছু জানার অদম্য ইচ্ছা। আর সেই ইচ্ছায় ভর দিয়েই জীবাশ্ম খুঁজে বেড়ান নিউজিল্যান্ডের মোর্ন। নিজেকে তিনি জীবাশ্ম অনুসন্ধানী বলে পরিচয় দেন। কিন্তু তাঁর খুঁজে পাওয়া জীবাশ্মই যে রাতারাতি সাড়া ফেলে দেবে, এমনটা আশা করেননি তিনি নিজেও। তবে প্রায় ১২ মিলিয়ন বছরের পুরনো কাঁকড়ার জীবাশ্ম খুঁজে পাওয়া নিঃসন্দেহে একটি বিরল কৃতিত্বের পরিচায়ক।

মোর্নের এই কৃতিত্বের অনেকটা সম্ভব হয়েছে লকডাউনের ফলে। এই সময় প্রায় জনহীন সমুদ্রতটে ঘুরতে ঘুরতে একটি পাথর খুঁজে পান তিনি। আর তারপর এয়ার স্ক্রাইব যন্ত্রের সাহায্যে সেই পাথর থেকে খুঁজে বের করেন একটি জীবাশ্ম। পুরো কাজটা করতে অবশ্য তাঁর সময় লেগেছে ১০ ঘণ্টা। তবে একটি সংক্ষিপ্ত ভিডিও আকারে তিনি পুরোটাই ইউটিউব চ্যানেলে পোস্ট করেন। আর এই একটি ভিডিও তাঁকে রাতারাতি জনপ্রিয় করে তুলেছে। ভিডিওতে তিনি জানান কাঁকড়ার এই প্রজাতিটির নাম টিউমিডকার্সিনাস জাইগ্যান্টিয়াস। আর পাথরের নমুনাটি তাঁরা মতে মায়োসিন যুগের। ফলে জীবাশ্মের বয়স আনুমানিক ১২ মিলিয়ন বছর। অবশ্য এই গণনায় কিছু ভুলত্রুটি থাকতে পারে, তবে সময় নির্ণয়ের জন্য প্রয়োজনীয় প্রযুক্তি তাঁর কাছে নেই।

পৃথিবীর বহু প্রাচীন ইতিহাসের সাক্ষী জীবাশ্ম। ছোটবেলা থেকেই ইতিহাসের বইতে জীবাশ্মের সঙ্গে পরিচয় আমাদের। কিন্তু কীভাবে পাথরের খণ্ড থেকে জীবাশ্ম বের করে আনেন বিশেষজ্ঞরা? এ-বিষয়ে আমাদের কারোরই স্পষ্ট ধারণা নেই। অথচ মোর্নের ভিডিওটি দেখলে সহজেই সেই প্রক্রিয়া বোঝা যায়। ভিডিওর শুরুতে যে পাথরের টুকরোকে দেখে আলাদা কিছুই মনে হবে না, তার থেকে কিছু স্তর তুলে ফেলতেই বেরিয়ে এলো আস্ত একটি প্রাণীর শরীর। স্বাভাবিকভাবেই ভিডিওটি জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। অনেকেই তাঁর কাজ দেখে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। নিজেদের উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন কমেন্ট বক্সে। আর এভাবেই আরেকবার শিক্ষা তার প্রথাগত গণ্ডি পেরনোর স্বাদ পেল। প্রত্যেকেই হয়তো জীবাশ্ম অনুসন্ধানী হয়ে উঠবে না, কিন্তু এই ভিডিও দর্শকদের অনেক অজানা প্রশ্নের উত্তর দেবে।

Latest News See More