একের পর এক দুর্যোগ নেমেই আসছে ভারতে। ভারত কেন, গোটা বিশ্বের অবস্থাই ক্রমশ পড়তির দিকে। করোনা এবং তার জেরে লকডাউন সমস্ত জায়গায় প্রশ্নচিহ্ন রেখে দিয়েছে। আর ভারত? প্রতিদিন দেখছে পরিযায়ী শ্রমিকদের অসহায় অবস্থা, তাঁদের মৃত্যু, অন্ধকার ভবিষ্যৎ। তারই মধ্যে নতুন তথ্য উঠে এল আমাদের সামনে। শুধু এই দেশেই গত মাসে অর্থাৎ এপ্রিলে ১২ কোটি মানুষ কাজ হারিয়েছেন। এবং এমন ঘটনা যে এত তাড়াতাড়ি থামবে না, সেটাও স্পষ্ট হচ্ছে।
থিঙ্ক ট্যাঙ্ক নামের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এই সমীক্ষা প্রকাশ করেছে। ভারতের অর্থনৈতিক অবস্থা, তার ওঠাপড়া সমস্তটাই পর্যবেক্ষণ করে এই সংস্থা। সেই অনুযায়ী বিভিন্ন সময় বিভিন্ন সমীক্ষাও বের করে। এবার তাঁদেরই সাম্প্রতিক সমীক্ষা ভারতের বর্তমান দুরবস্থাকেই আরও প্রকট করে দিল। লকডাউনের এই সময় এমনিতেই সমস্যায় পড়েছে মানুষ। একে করোনা ভাইরাস, তার ওপর সংসারের ভাঁড়ার ক্রমশ তলানিতে। অনেকে ‘ওয়ার্ক ফ্রম হোম’ করলেও, সমাজের একটা বড়ো অংশের এরকম কোনো ‘সমাধানসূত্র’ নেই। তাঁরা মাইলের পর মাইল হেঁটে নিজের বাড়ির দিকে যাচ্ছে। অনেকে সেটাও পারছে না। কারণ? টাকা নেই।
এমনই পরিস্থিতিতে গত মাসে নতুন করে কাজ হারালেন প্রায় ১২ কোটি মানুষ। থিঙ্ক ট্যাঙ্কের রিপোর্ট অনুযায়ী, মূলত যারা ক্ষুদ্র-মাঝারি শিল্পের সঙ্গে যুক্ত, যারা দিন আনে দিন খায়, তাঁরাই বেশি করে কাজ হারাচ্ছে। কাজ চলে যাচ্ছে রাস্তার ধারে চা নিয়ে বসা লোকটারও। করোনার সঙ্গেই এসেছে ঘূর্ণিঝড়, পঙ্গপাল। এই সমস্ত জিনিস এই দুর্যোগকে আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে। গোটা বিশ্বের সমীক্ষা অনুযায়ী, খুব তাড়াতাড়ি ভয়ানক দারিদ্র্য নেমে আসতে চলেছে পৃথিবী জুড়ে। আর দারিদ্র্য মিছিলের একদম সামনে থাকবে ভারত। অর্থনীতিবিদদের মতে, করোনা নয়; আসল রোগ হল দারিদ্র্য, অভাব, ভুখা পেট।
তার মধ্যে কাজ হারাচ্ছেন অগুনতি মানুষ। এমনিতেই দেশের অর্থনীতির অবস্থা যে খুব ভালো ছিল তা বলা যায় না। বেকারত্বের হার সর্বোচ্চ ছিল। তারই মধ্যে এমন ঘটনা এক ধাক্কায় আরও পেছনে নিয়ে এল আমাদের। কী হবে ভবিষ্যৎ, অন্ধকারে সবাই…
Powered by Froala Editor