রাস্তার দুধারে সারি সারি মানুষের ঢল। কিছুদিন আগেও তাঁদের নিজস্ব বাড়ি ছিল। বাড়ির মধ্যে ছিল নিজস্ব সংসার। কিন্তু যুদ্ধের বাস্তবতায় সবকিছু হারাতে হয়েছে। এখন নিজের দেশেই উদ্বাস্তু অন্তত ২২ হাজার পরিবারের মানুষ। আফগানিস্তানের সামরিক সংঘর্ষে বিপর্যস্ত মানুষের দল এসে ভিড় করেছেন কান্দাহার শহরে। কারণ এখানেই এখনও সামরিক বাহিনী নিজেদের শক্তি ধরে রেখেছে। তালিবানদের আক্রমণের হাত থেকে বাঁচার নিরাপদ জায়গা কান্দাহার। ইতিমধ্যে সমস্ত উদ্বাস্তুদের জন্য অস্থায়ী শিবির তৈরির কাজও শুরু করে দিয়েছে আফগানিস্তানের সামরিক বাহিনী। অন্তত ১১ হাজার পরিবারের থাকা ও খাওয়ার ব্যবস্থা করা সম্ভব হয়েছে সেখানে।
আফগানিস্তানের সাম্প্রতিক ইতিহাসে যুদ্ধ নতুন কিছু নয়। মার্কিন সেনা-শাসনের সময়েও যুদ্ধ লেগেই থাকত। ২০০১ সাল থেকেই এই ঘটনা প্রত্যক্ষ করে আসছেন মানুষ। অবশেষে আমেরিকা তার সেনা প্রত্যাহার করল ঠিকই। কিন্তু তাতে পরিস্থিতি শান্ত না হয়ে আরও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছে। মার্কিন সেনা অপসারণের সুযোগ নিয়ে আফগানিস্তান সীমান্তে ঢুকে পড়েছে সন্ত্রাসবাদী তালিবান গোষ্ঠী। বিগত ২ সপ্তাহের মধ্যে দেশের অন্তত ৭০ শতাংশ অঞ্চল দখল করে নিয়েছে তালিবান বাহিনী। সমস্ত শক্তি দিয়ে লড়াই করেও পেরে উঠছে না আফগানিস্তানের সামরিক বাহিনী।
আফগান সরকার থেকে সাম্প্রতিক একটি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আপাতত যুদ্ধ-বিধ্বস্ত মানুষদের বাঁচিয়ে রাখাই সরকারের প্রথম কর্তব্য। আর সেই দায়িত্বের কথা মাথায় রেখেই কান্দাহার শহরে গড়ে তোলা হয়েছে উদ্বাস্তু শিবির। অস্থায়ী হলেও মানুষগুলোর মাথার উপরে ছাদের ব্যবস্থা করা গিয়েছে। দিনে তিনবেলা খাবারের বন্দোবস্তও করা হয়েছে। তবে এখনও প্রায় অর্ধেক মানুষ আশ্রয়হীন হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। তাঁদের জন্যও খুব তাড়াতাড়ি শিবির তৈরি হবে বলে জানিয়েছে সরকার। কিন্তু যুদ্ধের পরিস্থিতি শান্ত না হলে কোনোদিনই স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারবে না আফগানিস্তান।
ইতিমধ্যে পৃথিবীর অন্যান্য দেশগুলির কাছে সামরিক সাহায্য চেয়েছে আফগানিস্তান। মার্কিন বিমান বাহিনী ইতিমধ্যে এয়ার-স্ট্রাইক শুরু করে দিয়েছে। কিন্তু প্রায় সমস্ত দেশ কবজায় নিয়ে আসা তালিবান বাহিনীকে দমন করা আদৌ সহজ হবে না। আপাতত এই যুদ্ধের হাত থেকেই মুক্তি চাইছেন বিপর্যস্ত মানুষগুলো।
আরও পড়ুন
অবশেষে আফগান ইতিহাস সংরক্ষণে উদ্যোগী তালিবানরা!
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের সঙ্গে সঙ্গেই মৌলবাদী আক্রমণ? আশঙ্কায় আফগান মহিলারা