বয়স ১০৫ বছর। তবে তাঁকে দেখলে বিশ্বাস হবে না কারোরই। কারণ এই বয়সেও সম্পূর্ণ কর্মঠ তিনি। এই বয়সেও দিনের অধিকাংশ সময়ই তাঁর কেটে যায় ক্ষেতে। তামিলনাড়ুতে জৈব কৃষিকাজের প্রবক্তা তিনি। কোয়েম্বাটুরের থেক্কামপট্টির এই বাসিন্দা আর রঙ্গমা প্রজাতন্ত্র দিবসের দিন সম্মানিত হলেন ‘পদ্মশ্রী’তে। এগ্রিকালচার বিভাগে পদ্ম পুরস্কার পেয়েছেন তামিলনাড়ুর এই ‘তরুণী’।
তবে চাষাবাদে অজৈব সারের ব্যবহার যে ক্ষতি করতে পারে মানুষের, তাই জৈব পন্থাকেই বেছে নিয়েছেন তিনি। লড়াইটা শুরু হয়েছিল প্রায় সাত দশক আগে। তখন ৩০-এর ঘরে বয়স তাঁর। সামান্য দোকান চালিয়ে সঞ্চিত অর্থ দিয়েই তিনি কিনে ফেলেছিলেন ১০ একর জমি। বর্তমানে তারই ২.৫ একর জুড়ে সন্তানস্নেহে তিনি করে চলেছেন কৃষিকাজ। সেখানে রয়েছে কলাবাগান। পাশাপাশি ঢেঁড়সের ক্ষেত।
কৃষিকাজের পাশাপাশি তামিলনাড়ুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপদেষ্টা মণ্ডলীর দায়িত্বও তাঁর কাঁধে। জৈব চাষের উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন সম্মেলনে এই বয়সেও বক্তৃতা দিয়ে চলেছেন তামিলনাড়ুর এই ভদ্রমহিলা।
অন্যদিকে একসময় থেক্কামপট্টির পঞ্চায়েতের ওয়ার্ড সদস্য ছিলেন রঙ্গমা। নির্বাচিত হয়েছিলেন করমাদাই পঞ্চায়েত ইউনিয়নের কাউন্সিলর হিসাবেও। তবে ক্ষমতার প্রভাব কখনই ছাপ ফেলেনি তাঁর ওপর। অতিসাধারণ, নম্র জীবনযাপনকেই আঁকড়ে বেঁচে রয়েছেন তামিলনাড়ুর এই নাগরিক। আর সেই কারণেই হয়তো স্থানীয়দের কাছে আদায় করে নিতে পেয়েছেন শ্রদ্ধা।
প্রজাতন্ত্র দিবসে তাঁর পদ্মশ্রী পাওয়ার পরই তাঁর বাড়িতে শুভেচ্ছা জানাতে আসেন গ্রামের মানুষ। তবে দীর্ঘদিনের এই কাজের স্বীকৃতি পাওয়ার পরও নিরুত্তাপ রঙ্গমা। জানান, পুরস্কার কিংবা স্বীকৃতি কোনোটার আশাই করেননি তিনি। কৃষির সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে তাঁর আবেগ। জানান, শরীর সচল থাকলে এভাবেই চালিয়ে যাবেন নিজের কর্মযজ্ঞ। একশোর কোঠা পার করেও বয়স যেন তাঁর কাছে নিছকই সংখ্যা মাত্র…
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
প্রথাগত শিক্ষা ছাড়াই একাধিক বিষয়ে পাণ্ডিত্য, পদ্মশ্রী পেলেন আলি মানিকফান