বয়স ১০৩, অ্যাথলেটিক্সে সোনা জিতলেন পাঞ্জাবের এই মহিলা

কারও কারও কাছে বয়স কেবলমাত্র সংখ্যা। মানসিক ও শারীরিক সন্তলন সঠিক বজায় রাখলে বয়সকেও যে হার মানানো যায়, তা দেখিয়ে দিলেন ১০৩ বছরের পাঞ্জাবি অ্যাথলিট তরুণী মান কৌর।

এই বয়সেও হাসিখুশি মন আর চনমনে শরীরের এই নারী পোল্যান্ডে অনুষ্ঠিত ওয়ার্ল্ড মাস্টারস অ্যাথলেটিক্স প্রতিযোগিতায় ২.১৩ মিটার লোহার গোলা ছুঁড়ে শটপাটে সোনা জিতেছেন। একশো থেকে একশো চার বছরের বিভাগে সিনিয়র শিখ অ্যাথলিট হিসেবে সোনা জিতেছেন মান কৌর। তিনি শটপাট, দৌড় এবং জ্যাভলিন থ্রো, তিনটি বিভাগেই অসামান্য পারদর্শিতা দেখিয়েছেন। গত তিন বছর ধরে লাগাতার রেকর্ড গড়েছেন তিনি। ২০১৭ সালে শটপাটে আমেরিকার হকিনের রেকর্ড ভেঙে আগেই নজির গড়েছিলেন এই মহিলা৷ জ্যাভলিন ছোঁড়াতেও তাঁর সমকক্ষ খুব কম মানুষ এই বিশ্বে আছেন।

১৯১৬ সালে পাঞ্জাবে মান কৌরের জন্ম। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের আগুন তখন সদ্য নিভু নিভু। ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রাম থেকে দেশভাগ সবকিছুর সাক্ষী এই বৃদ্ধা ছুটে চলেছেন পঁয়ত্রিশ বছর বয়স থেকে। থেমে গেলে যে জীবনও থেমে যায় - এই সারসত্য মেনে তিনি ছুটে চলেছেন বিন্দুমাত্র অবসর গ্রহণ না করে। স্বামী, সংসার, ছেলেমেয়ে সামলে তিনি ক্রমশ আন্তর্জাতিক স্তরে উঠে এসেছেন। মান কৌরের ছেলে ছিয়াশি বছরের গুরুদেব সিং প্রবীণদের অলিম্পিকে একাধিকবার দেশের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেছেন।

মান কৌরের বয়স যখন তিরানব্বইয়ের কোঠায়, তখন তিনি সংবাদ মাধ্যমের শিরোনামে আসেন। যখন অন্যান্য বয়স্ক-বয়স্কাদের এই বয়সে বেঁচে থাকাটাই কঠিন হয়ে দাঁড়ায়, তখন মান কৌর স্পোর্টস শ্যু পরে মাথায় ব্যান্ড বেঁধে দৌড়াচ্ছেন। পুত্র গুরুদেব সিংয়ের থেকে জানা যায় যে, তাঁর মা প্রথম একশো মিটার দৌড়েছেন মাত্র এক মিনিট এক সেকেন্ডে। ২০১৭ সালে অকল্যান্ডে ১০০ মিটার দৌড়ে প্রথম হয়ে তিনি জিতেছিলেন তাঁর খেলোয়ার জীবনের সতেরোতম পদক। ২০১৮ সালে স্পেনের মালাগায় আয়োজিত ওয়ার্ল্ড মাস্টারস অ্যাথলেটিক্সে তিনি নাম লেখান এবং দুশো মিটার দৌড় প্রতিযোগিতায় স্বর্ণপদক জিতে নেন।

বিখ্যাত মডেল অভিনেতা মিলিন্দ সোমান তাঁর ছবি পোস্ট করে সোশাল মিডিয়াতে লিখেছেন যে, এই নারীর সক্রিয়তা চাক্ষুষ করাও সৌভাগ্যের। এই সক্রিয়তা, পারদর্শিতা শুধু গর্বের নয়, উদ্বুদ্ধও করবে অনেককেই।

Latest News See More