১০০ বছর বয়সী এই মানুষটি জন্মেছিলেন প্রথম বিশ্বযুদ্ধের একদম শেষের দিকে। ১৯১৯ সালের ডিসেম্বরে নিউ ইয়র্কে জন্ম এক যমজ সন্তানের। তাঁদেরই একজন ফিলিপ কাহন। আর অন্যজন? জন্মের সপ্তাহ খানেকের মধ্যেই মৃত্যু হয়েছিল ফিলিপের যমজ ভাইয়ের। কারণ তখনও পৃথিবী জুড়ে চলছিল এক মহামারী। যার নাম স্প্যানিশ ফ্লু। ১০০ বছর আগে এক মহামারীতে প্রাণ হারিয়েছিলেন ফিলিপের যমজ ভাই, আর ঠিক ১০০ বছরের মাথায় পৃথিবী থেকে চলে গেলেন তিনি নিজেও। কারণ আবারও পৃথিবীর বুকে ছড়িয়ে পড়েছে আর এক মারণ রোগ, কোভিড-১৯। ঠিক শতবর্ষের মাথায় যেন ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঘটল।
নিউ ইয়র্কের নাসাউ কাউন্টির সবচেয়ে বয়স্ক মানুষ ছিলেন ফিলিপ। তাঁর দীর্ঘ জীবনের স্মৃতি শুনতে ভিড় করতেন অনেকেই। ফিলিপ তাঁদের সেইসব গল্প বলতেন। যুদ্ধের গল্প, দ্বিতীয়ত বিশ্বযুদ্ধের। তিনি তখন মার্কিন বিমান বাহিনীর সার্জেন্ট। একাধারে পাইলট এবং মেকানিক তিনি। পৃথিবীর ইতিহাসে সবচেয়ে বড় যুদ্ধেও বিচলিত হননি ফিলিপ। কিন্তু করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে তিনি বিচলিত হয়ে উঠেছিলেন।
পৌত্র জিসম্যানের কথায়, শেষদিকে প্রায়ই মৃত ভাইয়ের কথা বলতেন ফিলিপ। সেই সপ্তাহ খানেকের স্মৃতি কিছুই ছিল না তাঁর। কিন্তু ঠিক ১০০ বছরের মাথায় ইতিহাসের এমন অবর্তনই যেন তাঁকে বিচলিত করেছিল। আর সেই আশঙ্কাও তো অমূলক ছিল না। করোনা ভাইরাসের আক্রমণেই মারা গেলেন ফিলিপ কাহন।
প্রায় চার মাস পেরিয়ে যাওয়ার পরেও বাড়ছে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ। দেখতে দেখতে বাড়ছে মৃত্যুও। বেশিরভাগ মৃত্যুই বয়স্ক মানুষের। যাঁদের সঙ্গে বেঁচে ছিল বিগত শতাব্দীর বহু দুঃসময়ের স্মৃতি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের মর্মান্তিক দুঃসময়েও যাঁরা বেঁচে থাকতে পেরেছিলেন, করোনা ভাইরাস তাঁদের প্রাণ কেড়ে নিচ্ছে। আর এভাবেই হারিয়ে যাচ্ছে বহু অলিখিত ইতিহাসও।