স্থানীয় সংবাদপত্রে নিজের নাম দেখে চমকে ওঠেন শতাধিক আয়ুর মানুষটি। জানতে পারেন, তিনি এবছর পেতে চলেছেন পদ্মশ্রী পুরস্কার। বয়সের হিসাব হারিয়ে ফেলেছেন আগেই। তবে বিগত এক শতাব্দীর অভিজ্ঞতা তাঁর স্পষ্ট মনে আছে। এই স্কুলের বয়সই তো হয়ে গেল নয়-নয় করে ৭০ বছর। আর, শেষ পর্যন্ত, সেই স্কুলই পদ্মশ্রী সম্মান এনে দিল নন্দ প্রুস্তির হাতে।
ওড়িশার প্রত্যন্ত গ্রামের নন্দ প্রুস্তি আর্থিক দুরাবস্থার কারণে নিজের প্রথাগত শিক্ষা সম্পূর্ণ করতে পারেননি। তখনই তিনি ভেবেছিলেন, গ্রামের দরিদ্র, নিরক্ষর মানুষদের জীবনে যদি খানিকটা শিক্ষার আলো দেওয়া যায়। স্বাধীনতার পরের ঘটনা। নিজের বাড়িতেই বানিয়ে ফেললেন আস্ত একটা স্কুল। শিক্ষক একজনই, নন্দ প্রুস্তি। ভোররাত থেকে দফায় দফায় কচিকাঁচারা আসে। বেলা ৯টা পর্যন্ত চলে পড়াশোনা। বিকেলে আবার দুদফায় আসে ছাত্রছাত্রীরা। আর সন্ধ্যার দিকে আসেন বয়স্ক মানুষরা। নিজেদের কাজকর্মের ফাঁকে তাঁদেরও উদ্যম কোনো অংশে কম নয়।
তবে এই কাজেই যে পদ্মশ্রীর মতো সম্মান পাবেন নন্দ প্রুস্তি, সেটা ভাবতে পারেননি গ্রামবাসীরা। আসলে তাঁদের কল্পনার উড়ান অতদূর পৌঁছয় না। তবে সেই গ্রামের ঘটনাই এখন সারা দেশের কাছে এক মাইলস্টোন। এভাবেও ইতিহাস তৈরি করা যায়।
Powered by Froala Editor