১৯৪৪ সালের এপ্রিল মাস। নেতাজির নেতৃত্বে ব্রহ্মদেশ পার করে মণিপুরের ইম্ফলে প্রবেশ করে আজাদ হিন্দ ফৌজ। সেখান থেকে ‘দিল্লি চলো’-র ডাক দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ব্যর্থ হয় সেই অভিযান। তবে নেতাজির এই লড়াই অনুপ্রেরণা জুগিয়েছিল ব্রিটিশ বাহিনীতে কর্মরত লক্ষ লক্ষ ভারতীয় সেনাকে। পরবর্তীতে যা প্রশস্ত করে ভারতের স্বাধীনতার পথ। নেতাজির (Netaji Subhas Chandra Bose) ১২৫তম জন্মবার্ষিকীতে সেই ঐক্যের বার্তা মানুষের কাছে তুল ধরতেই, মণিপুর থেকে দিল্লির উদ্দেশ্যে সাইকেলে পাড়ি জমাল বছর দশেকের কিশোর।
আরভ ভরদ্বাজ (Arav Bharadwaj)। দিল্লির এই ছোট্ট কিশোরের কর্মকাণ্ড রীতিমতো অবাক করার মতোই। মাত্র ১০ বছর বয়সে এমন চিন্তাভাবনা এবং দেশপ্রেম ক’জনের মধ্যেই আর দেখা যায়! ছোটো থেকেই ঠাকুরদার কাছে নেতাজির ইম্ফল অভিযানের গল্প শুনত আরভ। বিপ্লবী কর্মকাণ্ডের নানান ঐতিহাসিক গ্রন্থ এবং নথিও ছোট্ট আরভের হাতে তুলে দিয়েছিল ঠাকুরদা। আজ ঠাকুরদা নেই ঠিকই। তবে এতটুকু ভাটা পড়েনি আরভের দেশপ্রেমে। স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস আজও তাঁকে অনুপ্রেরণা জোগায় প্রতিটা ক্ষেত্রেই। আরভের ভাষায়, তার ‘আইডল’ স্বয়ং নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু।
চলতি বছরে ১২৫-এ পা দিয়েছেন নেতাজি। সেইসঙ্গে, এই বছরটা ভারতের স্বাধীনতার ৭৫তম বছরও বটে। এই উপলক্ষেই নেতাজির ঐক্যের বার্তা গোটা দেশের কাছে তুলে ধরতে ভারত ভ্রমণের পরিকল্পনা করেছিল আরভ। না, ছোট্ট শিশুকে আটকায়নি তাঁর বাবা-মা। বরং, তাকে সঙ্গ দিতে নিজেও সাইকেল নিয়ে পথে নেমেছেন আরভের বাবা, চিকিৎসক ডাঃ অতুল ভরদ্বাজ।
মণিপুরের মইরং-এ রয়েছে আইএনএ বা আজাদ হিন্দ ফৌজ মিউজিয়াম। গত ১৪ এপ্রিল সেখান থেকে সাইকেলে যাত্রা শুরু করেছিলেন অতুল এবং আরভ। কম করে হলেও, দিল্লি সেখান থেকে প্রায় আড়াই হাজার কিলোমিটারের পথ। দিল্লির ন্যাশনাল ওয়ার মেমোরিয়ালে না পৌঁছানো পর্যন্ত লক্ষ্যে অবিচল ষষ্ঠ শ্রেণির কিশোর। গত পরশু পশ্চিমবঙ্গের আলিপুরদুয়ারে এসে পৌঁছায় আরভ। একদিন সেখানে কাটিয়ে আজ আবার শুরু হচ্ছে তার যাত্রা।
তবে শুধু নেতাজির আদর্শ এবং ঐক্যের বার্তাই নয়, একই সঙ্গে পরিবেশ দূষণ নিয়েই প্রচার চালিয়ে যাচ্ছে দিল্লির খুদে। সাইকেল অভিযানের ফাঁকে ফাঁকেই মানুষের কাছে তুলে ধরছে প্লাস্টিক দূষণের ক্ষতিকর প্রভাব। বছর দশেকের কিশোরের এই সাহসিকতা এবং উদ্যম রীতিমতো স্তম্ভিত করে দেয় যে কাউকেই…
Powered by Froala Editor