উন্নয়ন নাকি প্রকৃতি, এই দ্বন্দ্বই এখন পৃথিবীর সমস্ত দেশে সবচেয়ে আলোচিত বিষয়। আর এর মধ্যে সাম্প্রতিক সময়ে বারবার গ্রামীণ ও আদিবাসী মানুষদের দেখা গিয়েছে উন্নয়নের বদলে প্রকৃতিকেই বেছে নিতে। আর সেই তালিকাতেই আরও এক সংযোজন উত্তরাখণ্ডের দেরাদুন শহর। তবে এবার নাগরিক মানুষই বিরোধিতা করছেন জঙ্গল কেটে ফেলার। প্রস্তাবিত প্রকল্প অনুযায়ী বিমানবন্দর সম্প্রসারণের জন্য কেটে ফেলা হবে আনুমানিক ১০ হাজার গাছ। আর এই সিদ্ধান্তেই ক্ষুব্ধ পরিবেশকর্মীরা। শহরের সাধারণ মানুষদেরও পাশে পেয়েছেন তাঁরা।
উত্তরাখণ্ডের চিন-ভারত সীমান্তের লাইন অফ অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোলের ঠিক কাছেই দেরাদুন বিমানবন্দর। সম্প্রতি সেই বন্দরকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হিসাবে ঘোষণা করেছিল কেন্দ্রীয় সরকার। কেন্দ্রের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছিল রাজ্যও। আর যেহেতু সাম্প্রতিক সময়ে চিন-ভারত রাজনৈতিক পরিস্থিতি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা, তাই তাকে নিয়ে সরকারের পরিকল্পনাও অনেকটাই বেশি। প্রস্তাবিত প্রকল্পের জন্য পার্শ্ববর্তী ২৪৩ একর বনভূমি বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। আর সমস্যার শুরু সেখান থেকেই।
পরিবেশকর্মীদের দাবি, ওই বনভূমিতে অন্তত ১০ হাজার বিরল প্রজাতির উদ্ভিদের বাস। পার্বত্য বনভূমির এমন জটিল বাস্তুতন্ত্র পৃথিবীতে কমই আছে। আবার বিমানবন্দর সম্প্রসারণের জন্য ভূমির প্রয়োজনীয়তাকেও অস্বীকার করা যায় না। তবে দেরাদুনের সাধারণ মানুষও পরিবেশকর্মীদের পাশেই দাঁড়িয়েছেন। সাম্প্রতিক সময়ে আমাজন থেকে ক্যালিফোর্নিয়ার ঘটনা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে বনভূমি ধ্বংস করার ভয়ঙ্কর প্রভাব। আর এইসব ঘটনাই সচেতন করেছে মানুষকে। তবে প্রকৃতিকে বাঁচিয়েও কি উন্নয়ন সম্ভব নয়? অবশ্যই সম্ভব। কিন্তু তার জন্য প্রয়োজন উপযুক্ত পরিকল্পনার। আর সেই ব্যবস্থা করতে হবে সরকারকেই।
Powered by Froala Editor