প্রতিদিন ১০ কোটি লিটার দূষিত জল মিশছে বারানসীর গঙ্গায়!

কয়েক দশক আগেও নির্মল গঙ্গার (Ganges) ধারে শহরের প্রবীণদের সান্ধ্য আড্ডা বসত বারানসীর (Varanasi) অসি ঘাটে। শুধুই অসি ঘাট নয়, দশাশ্বমেধ, মণিকর্ণিকার মতো ঘাটগুলিতে পর্যটকদের ভিড় নামত। সেই ভিড় এখনও আছে। কিন্তু গঙ্গার ঘাটের সেই নির্মল দৃশ্য এখন বিরল। তার বদলে চোখে পড়বে কালো এবং নোংরা জল (Pollutant Water)। ইতিমধ্যে নমামি গঙ্গা প্রকল্পে কয়েক কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে। তবু প্রতিদিন প্রায় ১০ কোটি লিটার অপরিশোধিত বা অর্ধপরিশোধিত জল গঙ্গায় মিশছে, শুধুমাত্র বারানসী শহর থেকেই। তাই নদীর স্বাস্থ্য নিয়ে রীতিমতো উদ্বিগ্ন প্রশাসনিক কর্তাব্যক্তি থেকে শুরু করে পরিবেশকর্মীরা।

বারানসীর মহামান্য মালভ্য গঙ্গা রিসার্চ সেন্টারের চেয়ারম্যান বিডি ত্রিপাঠী জানিয়েছেন, সরকারি এবং বেসরকারি উদ্যোগে শহরে বেশ কিছু জল প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্র তৈরি করা হয়েছে। কিন্তু সেখানেও সুব্যবস্থা চোখে পড়ছে না। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই জল অর্ধেক পরিশোধন করে নদীতে ফেলে দেওয়া হচ্ছে। অথচ দূষিত জল একবার নদীতে মিশলে তা আর আলাদা করার উপায় থাকে না। তাই এই বিষয়ে অবিলম্বে সদর্থক পদক্ষেপ নেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে বলে জানিয়েছেন ত্রিপাঠী।

জল পরিশোধনের পাশাপাশি শহরের বিভিন্ন অঞ্চলে জলের গুণমান পরীক্ষাকেন্দ্র গড়ে তোলার দাবিও জানাচ্ছেন পরিবেশকর্মীরা। বেনারস হিন্দু ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক বিশ্বম্ভর নাথ মিশ্র জানিয়েছেন, এখনও শহরের সমস্ত অঞ্চল জল পরিশোধন কেন্দ্রের সঙ্গে যুক্ত নয়। অথচ সেইসব অঞ্চল থেকে নিয়মিত পরিত্যক্ত জল মিশছে গঙ্গায়। এছাড়া বিভিন্ন কারখানার যন্ত্র কতটা কার্যকর অবস্থায় রয়েছে, তাই নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেছেন তিনি।

তবে বিগত ১০ বছরে গঙ্গার ঘাটের ছবিটা যে কিছুটা বদলেছে, সেটা স্বীকার করছেন সকলেই। আগের চেয়ে নদীর ঘাট এখন কিছুটা পরিষ্কার। বিশেষ করে ঘাটে সরাসরি বর্জ্য পদার্থ ফেলা অনেকটাই কমেছে। বারানসীর ঘাটের নৌচালকরাও জানিয়েছেন, নদীর জল ধীরে ধীরে পরিষ্কার হচ্ছে। তবে শুধুই বাহ্যিক পরিচর্যায় গঙ্গার স্বাস্থ্য ফেরানো সম্ভব নয়। প্রতিদিন যে বিপুল পরিমাণ দূষিত জল গঙ্গায় মিশছে, তা বন্ধ করা এই মুহূর্তে আশু প্রয়োজন।

আরও পড়ুন
সংকটে গঙ্গা, সিন্ধু; ২০৫০-এর মধ্যে দেখা দেবে জলাভাব!

Powered by Froala Editor

আরও পড়ুন
গঙ্গা বাঁচাতে উৎস থেকে মোহনা অবধি দৌড় মধ্যপ্রদেশের অতুলের