রুশ-ইউক্রেন দ্বন্দ্বে ১ সপ্তাহে দেশছাড়া ১০ লক্ষ মানুষ

রাশিয়া এবং ইউক্রেনের যুদ্ধ পরিস্থিতি নিয়ে সারা পৃথিবী নড়েচড়ে উঠেছে। যুদ্ধ পুরোদমে শুরু না হলেও সমস্ত দেশ এখন পক্ষ নিতে শুরু করে দিয়েছে। সেইসঙ্গে ইউক্রেনে আটকে থাকা প্রবাসীদের ফিরিয়ে আনার কাজও চলছে। কিন্তু ইউক্রেনের বাসিন্দারা কেমন আছেন এই সময়ে? সাম্প্রতিক পরিসংখ্যানে উঠে এল তারই ভয়ঙ্কর ছবি। অন্যান্য যুদ্ধপরিস্থিতির মতোই এখনও শুরু হয়েছে উদ্বাস্তু মিছিল। ইউক্রেন (Ukraine) ছেড়ে প্রতিবেশী দেশগুলিতে গিয়ে আশ্রয় নিচ্ছেন সেখানকার মানুষ। এমনটাই জানাচ্ছে জাতিপুঞ্জের (UN) তথ্য।

জাতিপুঞ্জের অভিবাসী হাইকমিশনারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, গত এক সপ্তাহে ইউক্রেন থেকে অন্তত ১০ লক্ষ মানুষ অন্য দেশে আশ্রয় নিয়েছেন। আর এই উদ্বাস্তু মিছিল এখনও শেষ হয়নি। প্রতিদিন একটু একটু করে বাড়ছে অভিবাসীর সংখ্যা। ২৪ ফেব্রুয়ারি, অর্থাৎ প্রথম যেদিন রুশ সেনাবাহিনী ইউক্রেনের সীমান্ত পেরিয়ে প্রবেশ করল, সেদিনই দেশ ছেড়েছিলেন ৮২ হাজার মানুষ। তার পরদিন সংখ্যাটা পৌঁছে যায় ১ লক্ষ ১৭ হাজারে। আর ১ মার্চ সমস্ত রেকর্ড ছাপিয়ে সংখ্যাটা দাঁড়ায় ২ লক্ষ। এই ১ সপ্তাহের মোট হিসাব যে কোনোভাবেই ১০ লক্ষের কম নয়, সেটা সহজেই অনুমান করা যায়।

তবে ইউক্রেন ছেড়ে সেই দেশের মানুষ হঠাৎ করে চলে আসছেন, এমনটা নয়। ওয়ার্ল্ড ব্যাঙ্কের পরিসংখ্যান বলছে শুধু ২০২০ সালেই ইউক্রেন থেকে সেই দেশের অন্তত ২ শতাংশ মানুষ অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছেন। আর এই সংখ্যাটা আনুমানিক ৪ কোটি। অর্থাৎ আন্তর্জাতিক স্তরে রুশ-ইউক্রেন দ্বন্দ্ব সাম্প্রতিক বিষয় হলেও সেখানকার মানুষ আগে থেকেই এই পরিস্থিতির আঁচ পাচ্ছিলেন বলে মনে করছেন অনেকে।

ইউক্রেনের এই পরিস্থিতি মনে করিয়ে দিচ্ছে ২০১১ সালের সিরিয়ার যুদ্ধের কথা। লাখ লাখ মানুষ যখন সিরিয়া থেকে চলে এসে তুরস্ক হয়ে ইউরোপে আশ্রয় খুঁজেছিলেন। ইউক্রেনবাসী প্রাথমিকভাবে আশ্রয় নিচ্ছেন পোল্যান্ডে। সেখান থেকে অন্তত ১ লক্ষ ১৬ হাজার মানুষ চলে গিয়েছেন হাঙ্গেরিতে। ৭৯ হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন মলদোভায় এবং ৭১ হাজার মানুষ স্লোভাকিয়ায়। এই বিপুল সংখ্যক অভিবাসীকে নিয়ে ইতিমধ্যে শুরু হয়ে গিয়েছে অর্থনীতির হিসাব। কিন্তু আর কত মানুষ শুধু যুদ্ধের জন্য নিজেদের দেশ ছাড়তে বাধ্য হবেন, জানেন না কেউই।

আরও পড়ুন
আমেরিকাকে মাত্র ৭২ লক্ষ ডলারে আলাস্কা বিক্রয়, রাশিয়ার ঐতিহাসিক ‘ভুল’

Powered by Froala Editor

আরও পড়ুন
বিশ্বের বৃহত্তম দেশ, প্রতিকূল প্রাকৃতিক পরিবেশও; কেন ‘অজেয়’ রাশিয়া?